• If you are trying to reset your account password then don't forget to check spam folder in your mailbox. Also Mark it as "not spam" or you won't be able to click on the link.

Adultery আগুণের পরশমণি : কামদেব

kumdev

Member
452
400
79


ষট্ত্রিংশতি পরিচ্ছেদ





দরজার পাশে বোর্ডে লেখা Dr Manjulika Roy,Ph.D
Principal
নীচে একটা টুলে বসে রামধারী।ক্লাসে যাবার সময় জিজ্ঞেস করেছিল ম্যাডাম তখন ক্লাসে ছিলেন।ক্লাস শেষ করে ফেরার সময় ইলিনা জিজ্ঞেস করতে রামধারী দাঁড়িয়ে সেলাম করে বলল,ম্যাডাম আছে।রামধারী অনেক দিনের পুরানো তার বাবার বয়সী।ইলিনার অস্বস্তি হয়। দরজা একটু ফাক করে ইলিনা বলল,মে আয় কাম ম্যাম?
ড.রায় চোখ তুলে তাকিয়ে ইশারায় আসতে বললেন।ইলিনা ভিতরে ঢুকতে বললেন,বসুন।
ইলিনা বসতে ড.রায় বললেন,এনি প্রব্লেম মিস ব্রাউন?
ইলিনা ব্যাগ হতে আমুর ছবি সাটানো ফর্ম বের করে এগিয়ে দিয়ে বলল,ম্যাম এগুলো এ্যাটেস্টড করতে হবে।
ড.রায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ফর্মটা দেখলেন।ফর্মে সাটানো একজন হ্যাণ্ডসাম ইয়াং বয়ের ছবির দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,হু ইজ হি?
ইলিনা লাজুক গলায় বলল,আমার হাজব্যাণ্ড।
বিস্ময়ে ড.রায় চোখ ছানাবড়া বললেন,আর উ ম্যারেড?কবে বিয়ে করলেন?
ফিফ্থ নভেম্বার।মাটিরদিকে তাকিয়ে ইলিনা বলল।
চার্মিং ফেস।ভেরি গুড মেয়েদের একজন পুরুষ সঙ্গী দরকার। মি.সোম কি করেন?
এই ভয়টা পাচ্ছিল ইলিনা।এরকম প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে ভেবেছিল।মৃদু গলায় বলল,তেমন কিছু না।
ড.রায়ের মুখে হাসি ফুটল বললেন,লাভ ম্যারেজ?
ইলিনা মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।
লাভ মেকস দা ইমপসিবল পসিবল।দার্শনিকের মত কথাটা বলে ড.রায় ইলিনার দিকে তাকিয়ে বললেন,কেমন লাগছে কনজুগ্যাল লাইফ?আর ইউ সটীশফাইয়েড?ড.রায় স্বাক্ষর করতে থাকেন।
ইলিনা কিছুটা বিরক্ত হয়।একটা সই করাতে এসে এত কথা ভাল লাগেনা।ইঙ্গিতটা বুঝতে পেরে ইলিনা বলল,আমরা একসঙ্গে থাকিনা,আলাদা থাকি।ম
ড.রায় বিস্মিত চোখ তুলে তাকালেন।তার হাজব্যাণ্ড একবেলা কাছে না পেলে অস্থির হয়ে ওঠে।বিয়ের পর আলাদা থাকে বিশ্বাস করতে চায়না মন।ফর্মটা এগিয়ে দিয়ে বললেন,অফিস থেকে সিল মারিয়ে নেবেন।
থ্যঙ্ক ইউ ম্যাম বলে উঠতে যাচ্ছিল ইলিনা।
এক মিনিট।বসতে বললেন ধড.রায়।
ইলিনা আবার বসে পড়ল।আবার কি বলবেন অনুমান করার চেষ্টা করে।
মিস ব্রাউন স্যরি মিসেস সোম কিছু মনে করবেন না,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
আবার কি জিজ্ঞেস করবেন।এখন মনে হচ্ছে অন্য কোথাও এ্যাটেস্ট করালে ভালো হতো।ঠোটে হাসি ফুটিয়ে তাকালো।
এইযে আপনারা আলাদা থাকেন মি.সোম আপত্তি করেননি?
আনু সাধারণের চেয়ে অন্যরকম।তারও মনে খটকা ছিল কিন্তু সেদিন ডিক টাচ করে বুঝেছে পাচ-ছয় ইঞ্চির মত হবে,ইরেকটেড হলে আরো বড় হবে।ইলিনা বলল,উনিই বলেছেন পাস করার পর আমরা একসঙ্গে থাকবো।
ইজ ইট?ভদ্রলোককে দেখার খুব লোভ হচ্ছে।
ওর ডিক দেখলে তুমি পাগল হয়ে যাবে।ইলিনা মুখে বলল,একদিন ওকে এনে আপনার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেব।
অনেক ধন্যবাদ।
ম্যাম আপনার কাছে আমার অনুরোধ,বিয়ের ব্যাপারটা আপনি কাউকে এখনই বলবেন না।
ড.রায় হেসে বললেন,ওকে ইউ ক্যান রেস্ট এ্যাসিওর।
প্রিন্সিপালের ঘর থেকে বেরিয়ে ইলিনা স্বস্তির শ্বাস ফেলে।পরমুহূর্তে আরেকটা চিন্তা মনের মধ্যে বিজকুড়ি কাটতে থাকে।আনু পাস করতে পারবে তো?ম্যাম নিশ্চয়ই খোজ নেবেন।পাস না করলে বেশ লজ্জার হবে।আনু নিয়মিত পড়ছে।একটা ব্যাপার খারাপ লাগে।পড়াশুনার প্রশস্ত সময় সকাল এবং সন্ধ্যে,সেই সময়টা ব্যস্ত থাকে দোকানে।দুপুরবেলা পড়ার সময় নয়।এখন মনে হচ্ছে ম্যামকে এ্যাটেস্ট না করালেই ভাল হতো।ঘড়ি দেখল ঘণ্টা পড়ার সময় হয়ে গেছে।এই পিরিয়ডে তার ক্লাস আছে।
প্রথমটা অত সিরিয়াস্লি নেয়নি আরণ্যক।যতদিন যাচ্চে ব্যাপারটা উপেক্ষা করতে পারেনা।বিয়ের বাধন কি এর চেয়ে জোরালো।সারাক্ষণ লিনা তার মন দখল করে বসে আছে।কলেজের অধ্যাপিকা তুলনায় সে অতি তুচ্ছ অথচ তাকেই বেছে নিল,অবাক লেগেছিল।তার মনেও সুপ্তভাবে ইচ্ছেটা না থাকলে আরণ্যক সম্মত হতোনা।মনে মনে আশঙ্কাওখ ছিল মোহভঙ্গ হলে পুরানো বস্ত্রের মত ত্যাগ করবে নাতো?
পিএসসির ফর্ম ফিলাপ করাবার পর বুঝেছে আশঙ্কা অমূলক।অসম্ভব মনের জোর মহিলার সন্তানের মত আগলে রাখে।লিনাই সব করে যাচ্ছে তাকে কিছুই করতে হচ্ছে না।অথচ বিনিময়ে কোনো চাহিদা নেই।আরণ্যকও এখন লিনাকে বউয়ের মত মনে করে।
রবীন্দ্রসঙ্গীত আরণ্যকের পছন্দ,এই গানটা আগে অনেক শুনেছে কখনো এভাবে ভাবেনি।লিনা বুকে চেপে ধরেছিল মনে হয়েছিল আগুণের পরশমণির স্পর্শে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছিল এক অনাস্বাদিত অনুভূতি।লিনা যেন আগুণের পরশমণি।তার মনের সুপ্ত আকাঙ্খ্যাকে জাগিয়ে দিয়েছে।সেই সঙ্গে ওকে দেখার জন্য মনে ছটফটানি।চালতাবাগানে নেমে বাসায় ফেরে সেজন্য দেখা হয় না।এই রাস্তা দিয়ে ফিরলে দেখা হতো।
আচ্ছা ভাই অপু সরকারের বাড়ী কোথায় বলতে পারবেন?এক ভদ্রলোক এসে জিজ্ঞেস করল।
আরণ্যকের লোকটিকে চেনা চেনা মনে হল বলল,অপুদাকে তো এখন বাসায় পাবেন না।
জানি অফিসে গেছে।আমি একটা জিনিস ওর বাসায় পৌছে দেব।
সোজা গিয়ে বা-দিকে টার্ণ নিয়ে কিছুটা গিয়ে দেখবেন একটা হলুদ দোতলা বাড়ী।একতলায় অপুদা থাকে।
ধন্যবাদ ভাই।
যাক বেশী খুজতে হলনা,মথুরেশ ভাবল।অপু নেই তো কি হয়েছে ওর বউ থাকলেই হবে।সেদিন নামটা জানা হয়নি।বলেছিল আসুন আলাপ করা যাবে।যেতে বলেছিল তাই যাচ্ছে। দেখা যাক আলাপ কতদূর গড়ায়।মথুরেশ ঘামতে থাকে।মাঝে মাঝেই ভদ্রমহিলার কথা মনে হতো।আসব-আসব করে আসা হয়নি। দেরী হয়ে গেছে বলে আজ অফিস যায়নি।মনে হল একবার ঢু মেরে দেখাই যাক না কি হয়। যদি পাত্তা না দেয় বাসায় ফিরে যাবে। রাস্তায় লোকজন কেউ নেই।রুমাল বের করে ঘাম মুছলো।ঐতো সামনে হলদে রঙের দোতলা বাড়ী।আশপাশ তাকিয়ে দেখল কাউকে নজরে পড়ল না।এগিয়ে গিয়ে দেখল দরজার পাশে দেওয়ালে ঝুলছে লেটার বক্স।তাতে লেখা অপূর্ব সরকার মিতা সরকার।মনে মনে উচ্চারণ করে মিতা সরকার।এতক্ষণে নামটা জানা গেল।মিতা ভেরি সুইট নেম।বন্ধ দরজার পাশে একটা গার্বেজ বালতী।মথুরেশ কলিং বেলে চাপ দেবে কিনা ভাবতে না ভাবতেই দরজা খুলে গেল,সামনে দাড়িয় মহিলা।মথুরেশ অবাক এই তো সেই মিতা সরকার।মহিলা ময়লার বালতীটা তুলে জিজ্ঞেস করল,কাউরে খুজতেচেন?
মথুরেশ হাসি টেনে বলল,মিসেস সরকার স্কুলে আপনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল।আপনি বলেছিলেন বাসায় আসুন আলাপ করা যাবে--।
মহিলা সন্দিগ্ধ চোখে মথুরেশের আপাদ-মস্তক দেখে।
চিনতে পেরেছেন?
আসেন ভিতরে আসেন।মহিলা দরজা ঘেষে দাড়াতে মথুরেশ ভিতরে ঢুকে গেল।মহিলা মুখ বাড়িয়ে রাস্তা দেখে দরজা বন্ধ করে দিল।

যাক মিসেস সরকার চিনতে পেরেছেন ভেবে মথুরেশ স্বস্তি বোধ করে।মহিলা একটা ঘরে নিয়ে গেল।ঘরে বিশাল খাট পাতা একপাশে এক জোড়া সোফা।সোফা দেখিয়ে বসতে বলে বলল,সে তো অনেকদিন আগের কথা এতদিনে সময় হল?
না মানে রোজই আসব-আসব ভাবি--।
যাক আসছো ভালই হইচে আমারও শরিলডা ম্যাজ-ম্যাজ করতিছে।দাদা-বৌদি দুজনেই অফিসে গেছে বাড়ী একেবারে ফাকা।আমার নাম রেবতী তুমি আমারে রেবু বলে ডাকবা।বসো চা খাবে তো?
চা মন্দ হয়না।
বসো চা নিয়ে আসতেছি।রেবতেী ময়লার বালতী নিয়ে চলে গেল।
দাদা-বৌদি অফিসে তার মানে অপু সরকার আর তার বৌ দুজনেই চাকরি করে।তাহলে রেবু কে?রেবু কি কাজের লোক?কাজের লোক হলেও রেবুর ফিগারটা ভালই।বিশেষ করে ওর পাছার গড়ণ মথুরেশের ভাল লেগেছে।তাকে তুমি-তুমি করছে। এসব ব্যাপারে অত ভাবলে চলেনা।ওতো বিয়ের পাত্রী খুজতে আসেনি।
পার্টি অফিসে লোকজন বেশী নেই কমরেড সন্তোষ মাইতি আর গোবিন্দ কথা বলছে।সন্তোষ মাইতি খুটিয়ে খুটিয় জিজ্ঞেস করছেন আর গোবিন্দ যতটা জেনেছে বলে যায়।হুউম রনো দুপুরবেলা দোকানে থাকেনা।এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়।দোকান ফেলে এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ানো চলতে দেওয়া যায়না।কিছু বলিনা বলে যা-না তাই করবে।কালাকেও তোয়াক্কা করেনা। পার্টি করিস না তাহলে সব ব্যাপারে তোর যাওয়ার কি দরকার।ড়ওকে পরিস্কার বলে দিতে হবে।
পার্টি অফিসে লোকজন আসতে থাকে।সন্তোষ গোবেকে বলল,তুই এখন যা।কাউকে কিছু বলতে যাস না।যা করার আমি দেখছি।
রেবতী চা নিয়ে এক কাপ এগিয়ে দিয়ে আরেক কাপ নিয়ে খাটে উঠে হাটু অবধি কাপড় তুলে বসল।মথুরেশ চায়ে চুমুক দিয়ে বুঝতে পারে কবেশ সুগন্ধি চা। চায়ে চুমুক দিতে দিতে ভাবে কি কথা বলবে?হঠাৎ নজর পড়ে রেবু এমনভাবে বসেছে দুই উরু সন্ধিতে গুপ্তাঙ্গ শাড়ীর ফাক দিয়ে দেখা যাচ্ছে।দেখা যাচ্ছে মানে বালে ঢাকা।মথুরেশের কাপড়ের নীচে চড়াই পাখির চিড়িক-চিড়িক নাচ শুরু হয়ে যায়।রেবুর কোনোা হুশ নেই।
মথুরেশ চা খেতে খেতে আড় চোখে আর ভাবে সোনাটা বেরিয়ে আছে রেবু কি বুঝতে পারছে না?
আচ্ছা তোমার কি ঐ একটাই ছেলে?রেবতী জিজ্ঞেস করল।
হ্যা ঐ একটাই ছেলে।
রেবতী বিরক্ত হয়।ধ্যামনাটা এখানে এসেছে কেন?কোনো কথা বলেনা কিছু জিজ্ঞেস হা-হু করে জবাব দেয়।রেবতী বলল,তুমি আজ এসেছো কেন?
তুমি বলেছিলে একদিন আসতে আলাপ করা যাবে।
এই কি আলাপের ছিরি!কথা নেই বার্তা নেই ঘটের মত বসে আছো।
তুমি সেভ করোনা?আলটপকা মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায়।
বোকাচোদার ঠিক নজরে পড়েছে রেবতী ভাবে।বলল,সেভ করতি ভয় করে যদি কেটেকুটে যায়।মাঝে মাঝে কেইচি দিয়ে ছেটে দিই।
অনেক লোশন বেরিয়েছে মাখিয়ে কিছুক্ষণ পর তোয়ালে দিয়ে মুছে দিলেই পরিষ্কার।
লোশন কেনার টাকা কে দেবে তোমার বাপ। শালা বাল নিয়ে পড়েছে আর কথা খুজে পেলনা।এরকম ম্যান্দা মারা পুরুষ রেবতীর পছন্দ হয়না।জিজ্ঞেস করল তুমি বাল কামাও?
মথুরেশ লজ্জায় লাল হয়।রেবতী খাট থেকে লাফিয়ে নেমে বলল,দেখি দেখি লোশন দিয়ে কেমন সাফ করেছো?বলেই মথুরেশ বাধা দেবার আগেই ধুতি তুলে বাড়াটা মুঠো করে ধরে রেবতী বলল,উরিব্বাস এতো দাড়িয়ে েগেছে।ইঞ্চি চারেক বাড়াটা ধরে খেচতে শুরু করল।মথুরেশ রেবুর কাধ খামচে ধরে সোফায় এলিয়ে পড়ল।মিনিট পাচেক যেতে না যেতেই পিচিক-পিচিক বীর্য ছিটকে বেরোতে থাকে।
রেবতী হাত মুছে বলল,দাও পঞ্চাশটা টাকা ছাড়ো।
টাকা কেন?আমি তো কিছু করিনি।হাপাতে হাপাতে মথুরেশ বলল।
মেঝে পরিষ্কার করবে কে?টাকা ছাড়ো।
অগত্যা মথুরেশ পকেট থেকে পার্স বের করে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট এগিয়ে দিল।
 

kumdev

Member
452
400
79



সপ্ত ত্রিংশতি পরিচ্ছেদ



হোটেলে ঢুকতেই বদ্যিনাথ এগিয়ে এসে বলল,রনো আজ কিন্তু নগদে খেতে হবে।
একপাশে চেয়ার নিয়ে বসতে বসতে আরণ্যক ভাবে এরমধ্যেই খাতা বন্ধ হয়ে গেছে।সন্তোষ মাইতি বেশ করিৎকর্মা।এই সব নেতার জন্য পার্টির পার্টির এই দুরাবস্থা।দু-বেলা খাওয়া আর রাতে থাকার বিনিময়ে দোকান সামলাতো।অন্য সময় কোথায় যাই কি করি তুমি কে হরিদাস তোমাকে বলতে হবে।আরণ্যক সোম কাউকে দাসখত লিখে দেয়নি।না খেয়ে মরে যাবে তবু কারো গোলামী করতে পারবে না।
সারা দুপুর দোকানে থাকলে পড়বে কখন?পরীক্ষায় বসবে না লিনাকে এখনই বলার দরকার নেই।কয়েকদিন পর আপনিই বুঝতে পারবে।যেখানেই যাক লিনাকে কোনোদিন ভুলতে পারবে না।বাঙালী মায়ের হৃদয় মমতায় ভরা শুনেছে কিন্তু ওতো ঠিক বাঙালী নয় তবু স্নেহ মমতা কারো চেয়ে কম নয়।খাওয়ার পর হাত-মুখ ধুয়ে পয়সা মিটিয়ে হোটেল থেকে বাইরে এসে দাড়ালো।মনে মনে হিসেব করে তার কাছে শ-চারেক মত টাকা আছে।এই টাকা শেষ হবার আগেই কিছু একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
কিরে রনো তুই এখানে?ধুমকেতুর মত উদয় হল গোবিন্দ।
তুই কাজে যাস নি?
নারে আজ একটা দরকারে কামাই করতে হল।
গোবেটা তাকে ফলো করছে নাতো আরণ্যক ভাবে,বলল যাক দেখা হয়েছে ভাল হয়েছেে।এই মহল্লা ছেড়ে চললুম পিকলুদের বলে দিস।
গোবিন্দ একটু ইতস্তত করে বলল,তোকে একটা কথা বলব?
আরণ্যক অবাক চোখে তাকায় ও আবার কি বলবে?
ফালতু ঝামেলা করে কি হবে বল।সন্তোষদার সঙ্গে কথা বলে মিটমাট করে নে,দ্যাখ এতদিন আমরা এক পাড়ায় একসঙ্গে বড় হয়েছি--।
দাড়া দাড়া কিসের ঝামেলা--ভাব করছিস তুই কিছু জানিস না।
না তা নয়।দুপুরবেলা বেরোবার কি দরকার বল?
কখন বেরবো কোথায় যাব তোর সন্তোষ মাইতি ঠিক করবে?
রনোর চোখের দিকে তাকিয়ে গোবিন্দ ভয় পেয়ে যায়।শালা যা গোয়ার গোবিন্দ কি করে বসে।নরম সুরে বলে,ঠিক আছে তুই যা ভাল বুঝিস আমি আসি।
আরণ্যক বিটি রোডের দিকে হাটতে থাকে।
কোথায় যাচ্ছে কে জানে।আরণ্যকের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে গোবিন্দ ভাবতে থাকে।নক্সাল আমলের কথা মনে পড়ল।তাকে প্রায় তুলে নিয়ে যাচ্ছিল কোথা থেকে এসে ঝাপিয়ে পড়ে সেদিন বাচিয়েছিল।নিজেকে কেমন অপরাধী মনে হয়।
ঘণ্টা পড়তেই ইলিনা ব্রাউন ক্লাস থেকে বেরিয়ে এল ।এটাই আজ তার শেষ ক্লাস ছিল।স্টাফরুমে এসে ব্যাগ গোছাচ্ছে এমসি বললেন,কি ব্যাপার মিস ব্রাউন আপনাকে দেখলাম প্রিন্সিপালের ঘরে গেছিলেন?
নজরে পড়েছে ইলিনা বলল,উনি ডেকেছিলেন।ছোটোখাটো মিথ্যেতে দোষ নেই।সেতো কোনো অপরাধ গোপন করছেনা।
হঠাৎ কি ব্যাপার?
তেমন কিছুনা।জানতে চাইলেন কোথায় থাকি,সঙ্গে আর কে কে থাকে এইসব।
উরিব্বাস ম্যাডাম আবার সবার খোজ খবর নেওয়া শুরু করল নাকি?
বিসি বলল,মিস ব্রাউন এবার একটা বিয়ে করে ফেলুন।এরকম একা একা ভাল লাগে নাকি?
আচ্ছা বাসনাদি বিয়ে করে আপনি খুব ভাল আছেন?পালটা বলল ইলিনা।
বিসি সবার দিকে চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলল,মানে?
মানে আমি জানতে চাইছি বিয়ে করে কেমন লাগছে?আপনাদের অভিজ্ঞতা থেকে জেনে নিই।
বিসি আমতা আমতা করে বলল,অভিজ্ঞতা কি বলব তবে মিঠেকড়া বলতে পারেন।
সবাই হো-হো হাসিতে ভেঙ্গে পড়ে।
আচ্ছা ভেবে দেখব,আসি।
ইলিনা বেরিয়ে পড়ল।বিয়ে কিনা জানিনা তবে আনুর সংস্পর্শে এসে মনে অনেক জোর অনুভব করে ইলিনা।
বাস স্টপেজে লোকজন নেই তাহলে একটু আগে বাস গেছে মনে হয়।যাতায়াতে ঘণ্টা দুয়েকের মত সময় নষ্ট।রাস্তার ওপারে ফ্লাট হচ্ছে দেখে মনে হল এখানে থাকলে অর্থ এবং সময়--দুয়েরই সাশ্রয় হতো।বাসের দেখা নেই।কি ভেবে রাস্তা পেরিয়ে ওপারে চলে এল।
ছাতা মাথায় একটি লোক দূরে দাঁড়িয়ে কাজ দেখছে।লোকটিকে জিজ্ঞেস করলে সব জানা যাবে।ইলিনা কাছে গিয়ে বলল,আচ্ছা ফ্লাটের দাম কি রকম পড়বে?
লোকটি অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে থাকে।
সব বুক হয়ে গেছে?
আপনি বাংলা বলতে পারেন?
বাংলায় থাকি বাংলা বলব না?
আপনি কোথায় থাকেন?
নর্থ ক্যালকাটা।
ওখান থেকে এখানে ফ্লাট খুজছেন?
এখানে একটা কলেজে পড়াই।
আপনি প্রফেসার?ফ্লাট আপনি পেয়ে যাবেন।রাস্তার ধারে ওই একতলা বাড়ীটা দেখছেন ওটাও ফ্লাট হবে।
ভদ্রলোক বেশী কথা বলে।ইলিনা বলল,এটা কি সব বুক হয়ে গেছে?
না তা নয়।আপনি এই কার্ডটা রাখুন এতে দাদার নাম ফোন নম্বর দেওয়া আছে।আপনি দাদার সঙ্গে কথা বলবেন।
ইলিনা কার্ডটি হাতে নিয়ে চোখ বোলায়।
শুনুন ম্যাডাম ফোনে বলবেন আমি প্রফেসর বলছি তাহলেই দাদা চিনতে পারবেন।
ইলিনা রাস্তা পেরিয়ে বাস স্টপেজে এসে দাড়ালো।
পশ্চিমদিগন্তে ঢলে পড়েছে সূর্য।আলো কমে এসেছে।অনেকটা পথ হেটে এল আরণ্যক।পছন্দের দোকান তেমন চোখে পড়েনি।একটা বই খাতার দোকানে একজন বসে আছে।আরণ্যক এগিয়ে গিয়ে কথা বলল,লোকটি দোকানের কর্মচারী।মালিক আসবে সন্ধ্যেবেলা।খদ্দেরের তেমন ভীড় নেই।একজন লোক আছে আরেকজন নেবে মনে হয়না।আরণ্যক হাটতে থাকে।সন্ধ্যে হয়ে এল।কয়েকটা দোকানে জিজ্ঞেস করেছে কারো লোকের দরকার নেই।এভাবে কি কাজ পাওয়া যায়।হাল ছাড়লে চলবে না।সামনে একটা মোবাইলের দোকান।এক্টু ইতস্তত করে এগিয়ে গেল।দোকানে কাউকে নজরে পড়ল না।একটু ভিতরে ঢুকে ভাবে কেউ তো ছিল,দোকান ফেলে গেল কোথায়?আরণ্যকের গা ছম ছম করে।এখানে থাকা ঠিক হবে না। শেষে কি প্যাচে জড়িয়ে পড়ে।সামনে টেবিলে একটা মোবাইল পড়ে তাতে ভিডিও চলছে।এক বিদেশিনী মহিলা দাঁড়িয়ে একেবারে নিরাবরণ, সামনে বসা একটি ছেলের মুখটা নিজের যোনীতে চেপে ধরেছে। লিনার মত দেখতে অবশ্য লিনা এমন অসভ্য নয়। বুঝতে অসুবিধে হয় না কেউ দেখতে দেখতে উঠে গেছে।থাকা ঠিক হবে না ভেবে ঘুরে দাড়াতে যাবে ভিতর থেকে মধ্য বয়সী একজন লোক বেরিয়ে এসে বললেন,কি চাই?আমি একটু বাথরুমে গেছিলাম।
আরণ্যক দেখল মোবাইলটা টেবিলের উপর উপুড় করে রাখা। আরণ্যক বলল,কিছু চাইনা।আপনি দোকানের মালিক?
আমি কানাই ধর,এই দোকান আমার।মালিককে কি দরকার?
আমি একটা কাজ খুজছি যদি কোনো কাজ পাওয়া যায় মানে--।
কানাই ধর অবাক হয়ে আপাদ মস্তক দেখতে থাকেন।সুন্দর চেহারা দেখে ভদ্রঘরের মনে হল।একটা কাজের লোক হলে মন্দ হয়না।
আগে কোথাও কাজ করেছো?কানাই ধর জিজ্ঞেস করল।
একটা বইয়ের দোকানে কাজ করতাম।
আগের দোকানের কাজ ছেড়ে দিলে কেন?
একজন মোবাইলে ব্যালান্স ভরতে এসেছে কানাই ধর তাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।পঞ্চাশের উপর বয়স কানাই ধরের এই বয়সেও এইসব ছবি দেখার বাতিক।আরণ্যক ভাবে কি বলবে?
খদ্দের মিটিয়ে কানাইবাবু বললেন,তোমার নামটা জানা হয়নি।তুমি বলছি কিছু মনে করোনি তো?
ঠিক আছে বয়জ্যেষ্ঠ্য আপনি তুমিই বলবেন।আমার নাম আরণ্যক সোম।
বিরাট নাম--।
সবাই আমাকে রনো বলে ডাকে।আরণ্যক হেসে বলল।
দেখো একজন লোক আমার দরকার।কিছু মনে কোরোনা তোমাকে আমি চিনিনা তুমিও আমাকে চেনোনা--তোমাকে অবিশ্বাস করছি না।দোকানে নানা কাজে খদ্দের আসে তুমি আগে কখনো এসব কাজ করোনি।সে আমি আস্তে আস্তে শিখিয়ে নেবো।তার আগে পাচ জনে যাকে চেনে জানে যেমন এম এল এ বা কাউন্সিলর কাউকে দিয়ে লিখিয়ে আনতে হবে সে তোমাকে চেনে।
আরণ্যক ভাবে তার জানা লোকজন সবই সন্তোষ মাইতির জানা শোনা।
কি এমন কেউ চেনা জানা নেই?
ঠিক আছে আমি তাহলে পরে আসবো।
বেশী দেরী কোরোনা কিন্তু।
যাক একটা সুরাহা হল।দোকান থেকে রাস্তায় নেমে উল্টোদিকে একটা চায়ের দোকান নজরে পড়তে ভাবল এক কাপ চা খাওয়া যাক।
কানাইবাবু লোকটার ব্যবহার খারাপ নয়।চেনেন না একটা পরিচয় পত্র চাইতেই পারে।মোবাইলে নোংরা ছবি দেখছিলেন।মানুষের হাতে যখন কাজ না থাকে যৌনতার চিন্তা মাথায় আসে।গোবিন্দর কাছ থেকে এতক্ষণে হয়তো ওরা সব খবর পেয়ে গেছে। চায়ে চুমুক দিয়ে ভাবে মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই।এক সময় বসতো বইয়ের দোকান এবার মোবাইলের দোকান।কানাইবাবু বলেছেন শিখিয়ে নেবেন।চা শেষ করে প্যসা দেবার জন্য পকেটে হাত ঢুকিয়ে চমকে উঠল।এইরে চাবিটা ফেরত দেওয়া হয়নি।ম্যডামের কাছে আরেকটা চাবি আছে তা হলেও?
 

kumdev

Member
452
400
79

অষ্টত্রিংশতি পরিচ্ছেদ




জানলার ধারে বসেছে ইলিনা,বাস ছুটে চলেছে।বাসায় গিয়ে দেখবে দোকানে চলে গেছে। আর বড়জোর মাস খানেকের মত আছে।পরীক্ষাটা মিটলে স্বস্তি,রেজাল্ট কি হবে গড নোজ।প্রিন্সিপাল ম্যাম নিশ্চয়ই খবর নেবেন,কি হল?ইলিনার চিন্তা বেড়ে গেল। জীবনে একজন পুরুষসঙ্গী দরকার। প্রিন্সিপাল ম্যামের কথাটা মনে হতে শরীরে শিহরণ খেলে যায়।জানি না কবে থেকে স্বামী-স্ত্রী এক বিছানায় শোবার সুযোগ হবে।বাসনাদি বিয়ের কথা বলছিলেন,ওরা জানেনা সে বিবাহিত। ইলিনার চোখ ছলছল করে।ডলিবোস তার সমবয়সী প্রায়, বিয়ের পর সিমলা গেছিল।ওখানে বরফ পড়ার কথা শুনেছে। শীত তো প্রায় দোর গোড়ায়।ভোরের বাতাসে হিমেল স্পর্শ পাওয়া যায়।
কণ্ডাক্টর বালিঘাট-বালিঘাট হাকতে পাশে বসা মহিলা উঠে দাড়াল।মনে হয় উনি এখানে নামবে।মহিলা চলে যেতে সামনে দাড়ানো মহিলা বসে পড়ল।ইলিনা আড় চোখে দেখলো মহিলার কানের নীচে ঘাড়ে কাকড়া বিছের ছবির ট্যাটু।একটা কথা ভেবে মনে মনে হাসে। কদিন আগে ডিবির সঙ্গে পার্লারে গিয়ে ঝোকের মাথায় ইলিনাও এক জায়গায় ANU লিখিয়েছে অবশ্য কেউ দেখতে পাবে না।ডলি বোস চুল সেট করাতে ব্যস্ত ছিল।আইবির এই কাণ্ড সেও জানে না।বাথরুমে গেলে ইলিনা করুন চোখে দেখে আনু লেখার উপর মোলায়েম হাত বোলায়।
দোকান বন্ধ দেখে পিকলু অবাক হয়।রনোটা গেল কোথায়?ঐতো প্রভাত আর গোবিন্দ আসছে।ওরা আসতে প্রভাত বলল,পিকলু শুনেছিস সব?
অবাক চোখে পিকলু জিজ্ঞেস করল,কি ব্যাপারে?
কিরে গোবে বল?
গোবিন্দকে পছন্দ নয় তবু পিকলু ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো।
গোবিন্দর মুখে সকালের ঘটনা শুনে পিকলুর মুখে কথা নেই।এত কাণ্ড হয়ে গেছে সে কিছুই জানেনা।রনো নেই ভাবতেও পারে না।
রনো কোথায় গেছে কিছু জানিস?পিকলু জিজ্ঞেস করল।
জিজ্ঞেস করেছিলাম কোথায় যাবি বলল পেটের তো একটা ব্যবস্থা করতে হবে।গোবিন্দ সংক্ষেপে বলল।
পেটের জন্য এই পাড়া ছেড়ে রনো চলে গেছে শুনে পিকলুর চোখ ঝাপসা হয়ে এল।সন্তোষদার উপর রাগ হয়।এমন তরতাজা সাহসী যুবক পেটের জন্য কোথায় ঘুরছে কে জানে।বিশু মান্তুকে আসতে দেখে ভাবে ওরা কি জানে ব্যাপারটা।
বিশু এসে বলল,আজ দোকান খোলেনি?
কে খুলবে?তুই কিছু শুনিস নি?
আচ্ছা গোবে কি হয়েছিল বলতো?বিশু জিজ্ঞেস করল।
কি আবার?দাদার বলেছিল দুপুরে দোকানে থাকতে হবে,কোথাও গেলে বলে যেতে হবে কোথায় যাচ্ছো।রনোটাও টেটিয়া বলে কিনা সকাল-বিকেল দোকান খুলে খদ্দের সামলানো আমার দায়িত্ব বিনিময়ে দু-বেলা আপনি খাই খরচ দেন।অন্য সময় আমি কি করি কোথায় যাই সেই কৈফিয়ত কাউকে দিতে যাব না।আমি দোকানের কর্মচারী কিন্তু আমার ব্যক্তিসত্বা কাউকে বিকিয়ে দিইনি।
এতে দোষের কি হল?রনো ভুল কি বলেছে?পিকলু বলল।
দুপুরে কোথায় যায় মান্তু তুই কিছু জানিস?বিশু বলল।
দুপুরে তোসে অফিসে থাকি রনো কোথায় যায় কি করে জানব--।
কোথায় যায় দাদাকে বলে যেতে পারতোত।গোবিন্দ বলল।
কেন দাদাকে বলে যেতে হবে কেন?পিকলু বলে,যদি বুঝতাম কোন অনৈতিক কাজ কিছু করেছে তাহলে অন্যকথা।রনোর উপর এটা জুলুম বলব।
দ্যাখ পিকআলু দাদা যা করেিছে এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার গোবের কথা শুনে মনে হল, পার্টির কোনো বিষয় নয়।এখানে আমরা কি করতে পারি তুই বল?
মান্তু বলল,মতাদর্শগত কোনো ব্যাপার হলে চুপ করে থাকার প্রশ্নই আসে না।
হ্যা রনোকে আমিও বলেছিলাম দাদার সঙ্গে বিষয়টা নিয়ে আলোচনায় বসতে--।
গোবিন্দ কথা শেষ করার আগেই বিশু বলল,রনো কি বলল?
কি বলবে আবার,ওর যা মাথা গরম আমি আর চাপাচাপি করিনি।
পিকলু বুঝতে পারে এদের বলে কিছু লাভ নেই।নিজের মনে বলে,সাহাবাবুর বাড়ীতে ছিল দাদা বুঝিয়ে-সুজিয়ে নিজের দোকানে নিয়ে এল।এবার নিজের দোকান থেকেই বে-ঘর করে দিল।
সত্যি রনোর জন্য খুব খারাপ লাগছে।আগে বাড়ী ছাড়ল এবার পাড়া ছাড়া হয়ে গেল।মান্তু বলল।
রাস্তায় অফিস ফেরতা মানুষের ভীড়,সারাদিনের কাজের শেষে বাড়ী ফিরছে।আশপাশের দোকান থেকে আলো উক পলকপচে পড়ছে কেবল বইয়ের দোকানের ঝাপ বন্ধ।ওরা কথা বলতে বলতে পার্টি অফিসের দিকে চলে গেল।
ইলিনা ব্রাউন দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখল কেউ নেই।থাকার কথাও নয়।বেলা কম হয়নি দোকান খুলতে হবে।এত চাপ একটু যদি পড়াশুনার সময় পেতো তাহলে অনু সিওর কিছু করে দেখাতো।আজ দেখা হবার সম্ভাবনা নেই।বাজারের রাস্তা দিয়ে এলে এক পলক দেখা হত।পোশাক বদলে রান্না ঘরে গেল ইলিনা ব্রাউন।চায়ের জল চাপিয়ে কালকের কাজগুলো মনে মনে ভেবে নেয়।কলেজ যাবে না বলে এসেছে,কলকাতায় ফর্ম -জমা দিতে যাবে।এক কাপ চা নিয়ে ব্যালকনিতে বসে চায়ে চুমুক দিতে থাকে।
পার্টি অফিসে দল বেধে ঢুকতে দেখে কমরেড সন্তোষ মাইতি বলল,কি ব্যাপার কমরেড দলবেধে একেবারে পার্টি অফিসে?
র-র-রনো আজ দো-দ-দ-কান খোঅরেছিসলেনি।তোতলা শিবু বলল।
হু-উ-ম একটা নতুন লোক খুজতে হবে।
কেন রনো বসবে না?পিকলু জিজ্ঞেস করল।
সন্তোষ মাইতি ঘাড় ঘুরিয়ে পিকলুকে এক নজর দেখে ভাবেন,বিষয়টা ওদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে হালকাভাবে দেখা ঠিক হবেনা।রক্ষণাত্মক অবস্থান নিয়ে বললেন,রনো কেন বসবে না সেটা রনোকে জিজ্ঞেস করো।
কিরে গোবে তোর কিছু বলার নেই?গোবিন্দকে জিজ্ঞেস করে পিকলু।
আমি কি বলব?আমার সঙ্গে দেখা হয়েছিল বলল,এ পাড়া ছেড়ে চললাম।
কেন চলে যাচ্ছে কিছু বলেনি?
বলেছে ত অনেক কথা,সব আমার মনেও নেই।তোরা তো জানিস ওর কেমন মাথা গরম--।
পিকলু বুঝতে পারে গোবে আসল চেপে কথা ঘোরাতে চাইছে।
শুনুন কমরেড সবাইকে একটা কথা বলতে চাই--সন্তোষ মাইতি বললেন,এটা পার্টির আভ্যন্তরীন বিষয় নয়।রনো আমাদের পার্টির কেউ নয়।আমি চাইনা পার্টি অফিসে এই নিয়ে কোনো আলোচনা হোক।
ফোন বাজতে ইলিনা দেখল স্ক্রিনে সুপমা।এতদিন পরে কি ব্যপার?কানে লাগিয়ে বললো,হ্যালো?
কিরে তোর খবর কি?সুপমাকে মনে আছে?
আমি সহজে কিছু ভুলি না তুইও তো আর ফোন করিস না।
সংসারে এত ঝামেলা সামলাতে হয়,বিয়ে করিস নি তুই বুঝবি না।
বুঝবো না কেন,তোর ছেলে কেমন আছে?
আর বলিস না এত দুষ্টু হয়েছে কি বলব--।
বাচ্চারা ঐরকম দুরন্ত হয়,বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে,তারপর বল এতদিন পরে কি মনে করে?
তুই কি বিয়ে থা করবি না পণ করেছিস?
বিয়ে করব না তাতো বলিনি।বলেছিলাম মনের মত কাউকে নাপেলে বিয়ে করব না।
সংসারে ভাল-মন্দ সবই থাকে,একেবারে মনের মত সব হয়না।তুই কি কাউকে পেলি?
মনে হচ্ছে পেয়েছি।
কি করে সে,ব্যবসা না চাকরি?
কিছুই করেনা আপাতত তবে ইউপিএসসি পরীক্ষা দেবে।
সে কিরে কিছুই করেনা?তুই ওর সঙ্গে কিছু করিস নি তো?
ইলিনা মনে মনে হাসে।কলিং বেলের শব্দ হতে ভাবে এখন আবার কে এল। বলল,মনে হচ্ছে কেউ এসেছে এখন রাখছি পরে কথা বলব।
ইলিনা ফোন রেখে ভাবে, কাল কলেজ যাচ্ছি না ফর্ম জমা দিতে যাবো।আনুর সঙ্গে কাল দেখা হবে। ওকে এক পলক দেখার জন্য
মনটা ভীষণ আকুলি বিকুলি করছে।
দরজা খুলে চমকে ওঠে,এতো ওয়াটার ইন্সটেড অফ ক্লাউডস।এর মধ্যে দোকান বন্ধ করে এসেছে? অবাক হয়ে বলল,কি হল বেল বাজাচ্ছো কেন?তোমার কাছে চাবি নেই?
আরণ্যক চাবি এগিয়ে দিয়ে বলল,এই নেও চাবি।
ইলিনা ভ্রু কুচকে এক পলক দেখে বলল,আগে ভিতরে এসো।
লিনার কথা উপেক্ষা করে সে সাধ্য নেই।সেজন্য আসতে চায়নি।আরণ্যক ভিতরে ঢুকতে দরজা বন্ধ করে পিছন ফিরে ইলিনা জিজ্ঞেস করল,কাল পড়তে আসবে না?
মাটির দিকে তাকিয়ে আরণ্যক বলল,আমি পরীক্ষা দেবনা।
কিছু একটা হয়েছে ইলিনা অনুমান করার চেষ্টা করে কি হতে পারে। লক্ষ্য করে ভিজে বেড়ালের মত দাড়িয়ে আছে।জিজ্ঞেস করল,সিদ্ধান্ত বদলের কারণটা জানতে পারি?
আমি পাড়া ছেড়ে অনেক দূর চলে যাচ্ছি।
বউ ফেলে চলে যাচ্ছো,চমৎকার! একটু এক বন্ধুর সাথে ফোনে কথা হচ্ছিল--।
আরণ্যক চোখ তুলে বলল,মেয়ে বন্ধুু?
ইলিনা হাসিটা গিলে নিয়ে বলল,ভার্সিটিতে হস্টেলে আমার রুমমেট ছিল।বীরু সামন্তের ভাগ্নী,কেন?
এমনি বললাম।
আজই কলেজে প্রিন্সিপাল ম্যামকে বললাম আমার হাজব্যাণ্ড ইউপিএসসিতে বসছে।লজ্জায় তাদের মুখ দেখাতে পারব না।
আরণ্যকের অস্বস্তি হয় তার জন্য লিনাকে লজ্জিত হবে।অসহায়ভাবে বলল,কি করব সন্তোষ মাইতি আমাকে কাজ ছাড়তে বাধ্য করেছে।
এতো ব্লেসিং ইন ডিসগাইজ।এবার দিনরাত এককরে পড়বে।যাও পড়তে বোসো আমার অনেককাজ কাজ আছে।ইলিনা রান্না ঘরে চলে গেল।আরণ্যক কি করবে দাড়িয়ে ভাবতে থাকে।
 

kumdev

Member
452
400
79

ঊনচত্বারিংশতি পরিচ্ছেদ




আরণ্যক সাহসী ভয়ডর নেই যা মন চায় স্পষ্ট বলে দেয়।কিন্তু ইলিনা ব্রাউনের কাছে লাজুক মুখের উপর কিছু বলতে পারেনা। স্টাডি রুমে ঢুকে আরণ্যক একটা বই তুলে নিয়ে সমগ্র পরিস্থিতি আগাগোড়া ভাবতে থাকে।সকাল থেকে সে একরকম ভাবে ভেবেছে,এখন সব তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে।কানাই ধর হয়তো আশা করে আছে।লিনা বলছিল কলেজে প্রিন্সিপালকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে।লিনা মিথ্যে বলবে না তবু বিশ্বাস করতে মন চায়না।স্বর্গের অপ্সরার কথা শুনেছে।লিনা তার কাছে সেই অপ্সরাদের মত।মর্ত্য মানুষকে বিয়ে করতে তাদের বয়ে গেছে।ঘড়ির কাঁটা টিকটিক এগিয়ে চলেছে।এভাবে কতক্ষণ বসে থাকতে হবে বুঝতে পারে না।
ওরা সবাই অফিস থেকে ফিরে এসেছে।গোবের কাছে এতক্ষণে সব শুনে থাকবে।ওদের কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে আরণ্যক অনুমান করার চেষ্টা করে।পিকলুর খুব খারাপ লাগবে।পার্টি করলেও পিকলু অন্যদের মত অন্ধ নয়।নিজস্ব ভাবনা-চিন্তা আছে।
সারাদিন কি খেয়েছে কে জানে।ইলিনা ব্রাউন রুটিতে মাখন মাখাতে মাখাতে ভাবে।মনে পড়ল প্রিন্সিপাল ম্যামের কথা।একজন পুরুষসঙ্গী খুব দরকার।ওদের কি মেয়ে সঙ্গীর দরকার নেই।এতদিন হয়ে গেল একটু ছুয়ে দেখার আগ্রহ দেখল না।ওকি মন থেকে তাকে মেনে নিতে পারেনি?ইলিনা মনে মনে স্থির করে ও যদি চলে যেতে চায় যত কষ্ট হোক বাধা দেবেনা।জোর করে অনিচ্ছুক মনকে বেধে রেখেহ কি লাভ? লুঙ্গির বাধন আলগা হতে রুটি পাশে রেখে লুঙ্গিটা বেধে নিল।লিনেনের লুঙ্গি পরতে আরামদায়ক হলেও গিট আলগা হয়ে যায়।
ও ঘরে বসে কি করছে,কোনো সাড়াশব্দ নেই। বয়স হলেও অনুটা একেবারে ছেলেমানুষ,এত অলস যে বলে বলে সব করাতে হয়।দোকানের কাজটা আর নেই।ভালই হয়েছে,অমন কাজ থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল।একহাতে প্লেটে খান কয়েক টোস্ট আরেক হাতে চায়ের কাপ নিয়ে স্টাডি রুমের দিকে গেল।মেঝেতে শতরঞ্চিতে আধশোয়া হয়ে আনু কিযেন ভাবছে। লুঙ্গির গিটটা সড়সড় করছে খুলে না যায়।ইলিনার দু-হাত জোড়া।গিটটা খুলে গেল মনে হচ্ছে ইলিনা দু-পা চেপে বলল,চা-টা ধরো-ধরো--।বলতে না বলতেই লুঙ্গিটা খুলে পায়ের কাছে পড়ল।এই ভয়টা পাচ্ছিল। উঠে বসে আরণ্যকের বিস্ময় বিহ্বল দৃষ্টি তলপেটের উপর লেপটে থাকে।কানাই ধরের মোবাইলে দেখা ভিডিওটা চোখের সামনে ভেসে উঠল।নাভি এবং যোণির মাঝে ফর্সা চামড়ায় জ্বল-জ্বল করছে ইংরেজি হরফে তার নাম।
দেখা হল?এবার চা-টা ধরো--।
লিনা সত্যি তাকে ভালবাসে?লিনার কথায় আরণ্যক হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিতে-নিতে লাজুক গলায় বলল,আমার নাম লিখেছো?
ইলিনা নীচু হয়ে লুঙ্গিটা তুলে কোমরে বেধে বলল,তোমার নাম হবে কেন অনু আর কারো নাম হতে পারেনা।
যে লিখেছে সেও দেখেছে তাহলে?
লেডিস পার্লার।আমি কি খুলে দাঁড়িয়েছিলাম?প্যাণ্টিটা একটু নামিয়ে দিয়েছিলাম।দেখলে তোমার এত জ্বালা কিসের?
জ্বলা না মানে--লিনা তোমার চা কই?তুমিও তো কলেজ থেকে ফিরে কিছু খাওনি।
আমার চা রান্না ঘরে।--
এখানে নিয়ে এসোনা।চা খেতে খেতে কথা বলি।
ছেড়ে চলে যাচ্ছিল এখন কথা বলার ইচ্ছে হয়েছে রান্না ঘরে যেতে যেতে ভাবে ইলিনা।
মুগ্ধ বিস্ময়ে লিনা-র চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে আরণ্যক।নিজেকে গৌরবান্বিত বোধ করে।এতকাল কি আবোল-তাবোল ভেবে এসেছে।লিনা সত্যিই তাকে স্বামী মনে করে নাহলে কেঊ ওখানে নাম লিখে রাখে।তার বউ একটা পাগলি।
মনে হচ্ছে মাথার থেকে ভূত নেমেছে। ফরম ফিল আপ করে বলে কিনা পরীক্ষা দেবোনা।বউ এবং অভিভাবিকা দুই দায়িত্বই তাকে পালন করতে হবে।একটা ব্যাপার আজ পরিষ্কার করে নেওয়া ভাল।চায়ের কাপ নিয়ে ফিরে এল ইলিনা ব্রাউন।
মেঝেতে মুখোমুখি বসে দুজনে চায়ে চুমুক দিতে থাকে।কেউ কোনো কথা বলেনা,গভীর নিস্তব্ধতা সারা ঘরে।
বিশু পিকলুরা কেউ জানে না জানলে বলবে বাদরের গলায় মুক্তোর মালা ভেবে মনে মনে হাসে আরণ্যক।কিভাবে শুরু করবে ইলিনা ভাবে।কিছু সময় কেটে যাবার পর ইলিনা বলল,তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করি?
আরণ্যক মুখ তুলে তাকালো।
অনেক ঝড়-ঝাপটা পেরিয়ে বড় হয়েছি।যা সত্যি তা যত নির্মম হোক তাকে মেনে নিতে শিখেছি।
লিনা কি বলতে চাইছে বোঝার চেষ্টা করে।কি এমন সত্যের কথা বলবে।ঝড়-ঝাপটা তাকেও অনেক পেরোতে হয়েছে।চাকরি হতে অবসর নেবার আগেই বাবা চলে গেল,কয়েক বছর পর মাও।
আমাকে জীবন সঙ্গী হিসেবে মেনে নিতে তোমার মনে কোনো দ্বিধার ভাব নেই তো?
একী বলছে লিনা এ প্রশ্ন তো তারই গলার নীচে খুস-খুস করছে। কৌতূহলী আরণ্যক বলল,এখন এ প্রশ্ন?
আরও পরে হয়তো তোমার মনে হতে পারে।
মানে?পরে কি মনে হতে পারে?
নিশীথের সঙ্গে আমার সম্পর্ক তাছাড়া আমার জন্ম পরিচয়--তুমি নির্দ্বিধায় বলতে পারো।
ইচ্ছের বিরুদ্ধে কয়েকদিনের সম্পর্ক হয়েছিল আমি জানি--আর জন্ম পরিচয়-।
আরণ্যক বুঝতে পারেনা লিনা এসব কথা আজই কেন বলছে।
থামলে কেন বলো।
সে অনেক কথা--গুছিয়ে হয়তো বলতে পারব না।
তুমি বলো আমি শুনবো।
আরণ্যক মুগ্ধ দৃষ্টিতে ইলিনাকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।ইলিনা বলল,কি দেখছো?
জনম জনম অবধি হাম রূপ নেহারলু নয়ন না তিরপিত ভেল।লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখলু তব হিয়ে জুড়ন না গেল।
মূল প্রসঙ্গ কি এড়িয়ে যেতে চাইছে?ইলিনা যখন কথাটা তুলেছে শেষ না দেখে সরছে না।জিজ্ঞেস করল, কই বললে নাতো?
এতদিন পর আবার অতীত নিয়ে ঘাটাঘাটির কি কারণ বুঝতে পারেনা।চলে যাচ্ছি বলায় কি ওর মনে শঙ্কা জেগেছে?আরণ্যক শতরঞ্চিতে শরীর এলিয়ে দিয়ে বলল,অতীতের কথা তুললে যখন আমি তোমাকে আরও অতীতে যেতে বলব।ইতিহাসে পড়েছি আদিম যুগের কথা।মানুষ ছিল পশুর মতো বনচারী।গাছের ফল নদীর জল খেয়ে অবাধ স্বাধীন জীবন যাপন করত।পরস্পরে ছিলনা কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক।কেউ কারো নয় ছিল ক্ষিধে পেলে খেত ইচ্ছে হলে রমণ করত।বিবর্তনের মাধ্যমে একসময় তারা সমাজবদ্ধ হল।জাতপাত এল তৈরী হল পারস্পরিক সম্পর্ক।আরোপিত হল বিধি নিষেধ।লিনা আমরা তাদেরই বংশধর।তোমার জন্মের জন্য তুমি নও মিঃ ম্যাথু ব্রাউন দায়ী।আমি তোমার অতীত নিয়ে ভাবিনা এখন যে লিনাকে দেখছি আমি তাকেই ভালবেসেছি।
তা হলে আমাকে ফেলে চলে যাচ্ছিলে কেন?
বিশ্বাস করো লিনা আমার যা সামর্থ্য তাতে তোমাকে বউ হিসেবে ভাবতে পারিনি।
আমাদের ভাবতে শেখানো হয়েছে স্ত্রীর ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিতে হবে স্বামীকে।কেন মেয়েরা কি সোশাল বার্ডন?তাকে বইতে হবে অন্য একজনকে?তোমাকে একটা কথা বলি,আমার যা আছে তোমার তা নেই আবার তোমার যা আছে আমার তা নেই।
আমার কি আছে?একটা দোকানে কাজ ছিল এখন তাও নেই।
তুমি জানো না তোমার কি আছে।এত মানুষের মধ্যে তোমাকে কেন বেছে নিলাম।কেন মনে হল আমার জন্যই ঈশ্বর একেই সৃষ্টি করেছে?এর মধ্যেই আমার ।নিরাপদ আশ্রয়।তোমার যা আছে তুমি দেবে আমার যা আছে আমি তাই দেব নিজেকে আলাদা ভাবনে না দুজনে মিলে আমরা এক।কি ভাবছো?
তোমার কথা শুনতে শুনতে একটা কবিতার কথা মনে পড়ল।নহ মাতা নহ কন্যা নহ বধূ সুন্দরী হে নন্দন বাসিনী উর্বশী।
এত চমৎকার বুঝিয়ে দিল অনু আমি নিজে কখনো এমনভাবে ভাবিনি।লোক চিনতে ভুল করিনি আমি।পাগলটাকে সামলানোর দায়িত্ব আমার।ইলিনা ব্রাউন গভীর ভাবনায় ডুবে যায়।
সন্তোষ মাইতি চাবি দিয়ে গোবিন্দকে দোকান খুলে বসতে বলেছে।অনিচ্ছা সত্বেও গোবিন্দ বসেছে।সবাই জড় হয়েছে,কারো মন ভাল নেই।তাকে একবার বলে গেল না পিকলুর মনে অভিমাণ।কোথায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে কে জানে।
কিরে গোবে এখন থেকে তুই দোকানে বসবি নাকি?মান্তু বলল।
খেয়ে- দেয়ে কাজ নেই দোকানে বসব।আমার চাকরিটা তুই করে দিবি নাকি?
বিমলি পিসি হাপাতে হাপাতে এসে বলল,রনো কইরে রনো কই?
বিমলা বোসবাড়ীতে রান্নার কাজ করে।গোবিন্দ জিজ্ঞেস করল,রনোকে কি দরকার?
একটু আগে ভোদা আমারে টানতি টানতি অন্ধকার গলির মধ্যে নিয়ে যাচ্ছিল,লাথি দিয়ে কোনোমতে ছাড়ায়ে চলে এসেছি।শালা মেয়ে দেখলি চোদার ইচ্ছে হয়,বাড়ীতে মা-বুন নাই।রনো কই?
ভদ্রভাবে কথা বলুন।পিকলু বলল।
অন্ধকারে কি জন্যি নিয়ে যাচ্ছেলো বুঝিনা কিছু।রনো কোথায়?
রনো কি করবে?আপনি বরং পার্টি অফিসে জানান।গোবিন্দ বলল।
পার্ট অফিসে বললি কিছু হবে না। যেমন ওল তেমনি বাঘা তেতুল দরকার।
পিকলু বলল,রনো আজ আসবে না।চলুন আমি আপনাকে পৌছে দিয়ে আসছি।আয়তো মান্তু।
বিমলাকে নিয়ে ওরা বোসবাড়ীতে পৌছে দিতে চলে গেল।চলতে চলতে ভাবে গরীব মানুষগুলোর রনোর প্রতি কি গভীর আস্থা।এদের ছেড়ে কোথায় চলে গেল কে জানে।
বিশু বলল,কালাবাবুকে বলা দরকার।আপনার লোকজনের জন্য পার্টির বদনাম হয়ে যাচ্ছে ওদের সামলান।
আমি আজই দাদাকে ব্যাপারটা জানিয়ে দেব।গোবিন্দ বলল।
ইলিনা ব্রাউন আড়চোখে দেখল অনু ছাদের দিকে তাকিয়ে নিষ্পাপ শিশুর মত চুপচাপ।রাত হচ্ছে খাবারগুলো গরম করতে হয়।সারাদিন কি খেয়েছে কে জানে।কাল ফর্ম জমা দিতে যেতে হবে আর কি করতে হবে মনে মনে ছক কষে নেয়।পিছনে লেগে থাকতে হবে ঢিল দিলে চলবে না।ইলিনা বলল,ওখানে শুেয়ে আছো কেন,আমার কাছে এসো।
আরণ্যক উঠে বসে অপরাধী মুখ করে লিনার কাছে এসে বসল।ইলিনা ওকে জড়িয়ে বুকে চেপে ধরল।কেমন এক শিরশিরানি অনুভূত হয়।আরণ্যকের চোখ ঝাপসা হয়ে এল।কিছুক্ষণ পর ইলিনা জিজ্ঞেস করে,কি হল কিছু বলছো না,খারাপ লাগছে?
খারাপ নয়,কেমন যেন লাগে।
আগে কোনো মেয়ের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক হয়নি?
আমি মেয়েদের সঙ্গে মিশতে পারিনা।বন্ধু বান্ধবদের বউদের সঙ্গে কথা হয়েছে এক-আধবার।আর একজন ছিল ঝর্ণাদি।আমাকে খুব ভালবাসত।স্কুলের দিদিমণি দোকানে আসতো।বিয়ের পর আর তেমন দেখা হয়না।সবাই জানে তবে--।কথা শেষ না করে আরণ্যক বুকে মুখ গুজে দিল।
ইলিনা মুখটা তুলে চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল,তবে কি?
বানিয়ে কথা বলতে পারেনা এই তার দোষ।কি বলবে বুঝতে পারেনা।
অসুবিধে থাকলে বলতে হবে না।অভিমানী গলায় বলল ইলিনা।
কোনো সম্মানিত মহিলার মর্যাদাহানি হোক চাইনা এজন্য কথাটা কাউকে বলিনি।
ঠিক আছে আমি শুনতে চাইনা।
না না তোমাকে বলতে অসুবিধে নেই।কি জানো কোনো কিছু গোপন করলে তা অসত্য হয়ে যায়না।আমাদের অঞ্চলে একজন নামকরা ডাক্তার ছিলেন ডঃ মুখার্জী।ওর মৃত্যুর পর বিধবা মালা মুখার্জীকে ডাক্তারবাবুর বন্ধুরা অনেক প্ররোচনা দিলেও তিনি সেই ফাদে পা দেন নি।আসন-প্রাণায়াম করতেন।একদিন আমাকে যোগাসন শেখাবার জন্য বাড়ীতে ডেকে নিয়ে গেলেন।আরণ্যক ধীরে ধীরে আনুপূর্বিক ঘটনা বলতে থাকে।শুনতে শুনতে ইলনার মনে অনেকদিন আগে পড়া তন্ত্রসার বইটার কথা।সাধনার মাধ্যমে কিভাবে আত্মায়-আত্মায়
মিলন হয়।আরণ্যক কথা শেষ করে মাথা নীচু করে বসে থাকে।
ওই একবারই তারপর যাওনি?
উনি মেয়ের কাছে অ্যামেরিকা চলে গেলেন।আমি এয়ারপোর্টে পৌছে দিয়ে এসেছি।
তুমি বিশ্রাম করো।আমি এবার রান্না ঘরে যাই।
জানো লিনা এয়ারপোর্টে যেতে যেতে উনি একটা অদ্ভুত কথা বলেছিলেন।
ইলিনা যেতে গিয়ে ঘুরে দাড়ায়।
আরণ্যক বলল,উনি বলেছিলেন,আমাকে তোমার খারাপ মহিলা মনে হলেও একদিন তোমার এই ভ্রম ঘুচবে।
 

AB35067890

New Member
16
1
3
Amar kache koekta story ache apni jodi lekhen best hobe. Amar Xforum ID Xforum/DK324568
 

kumdev

Member
452
400
79
চত্বারিংশতি পরিচ্ছেদ



অনুকে আজ নতুন করে চিনলো।নারী সংসর্গ হয়েছে আগে তাও এত নিষ্পৃহ থাকতে পারে কিভাবে ভেবে বিস্মিত হয়।বদ্ধ ঘরে একলা নারী সামনে তবু ভিতরের হিংস্র পশুটা দাত নখ বের করে বেরিয়ে এলনা।কাম প্রেমকে আচ্ছন্ন করে কথাটা মনে পড়ল।সুন্দর বলেছে কথাটা। ইলিনা ব্রাউন নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করে।কলঙ্কিত জন্ম পরিচয় মায়ের অবজ্ঞা অবহেলার জন্য তার আর কোনো আক্ষেপ নেই।অনুকে জীবনসঙ্গী পেয়ে নিজেকে গর্বিত মনে হয়।অনু তার পরশমণি।যার ছোয়াতে সকল ইচ্ছে সোনা হয়ে যায়।
পিকলু মান্তু ফিরে আসতে ওরা জিজ্ঞেস করল,কিরে কিছু দেখলি?
না। তবে কিছু না হলে বিমলিপিসি খালি খালি বানিয়ে বলতে যাবে কেন?
রনো নেই জানার পর থেকে পাড়াটা কেমন ফাকা ফাকা লাগে পিকলুর।গোবিন্দকে জিজ্ঞেস করল,হ্যারে গোবে তোর সঙ্গে কোথায় দেখা হয়েছিল?
আমার সঙ্গে?ও হ্যা বদ্যিনাথের হোটেল থেকে বেরোচ্ছিল,আমাকে দেখে বলল,সবাইকে বলে দিস এ পাড়া ছেড়ে চললাম।

তুই কি বললি?
কি বলব,তুই তো জানিস ও কিরকম গোয়ার গোবিন্দ।বললাম দাদার সঙ্গে মিটিয়ে নে।কি বলল জানিস?
কি বলল?সবাই ঘুরে তাকায়।
আরণ্যক সোম কাউকে দাসখত লিখে দেয়নি।না খেয়ে মরব তবু কারো গোলামী করতে পারব না।
দাসখত গোলামী এসব কথা কেন আসছে পিকলু বুঝতে পারেনা।সন্তোষদার সঙ্গে এ্যাকচুয়ালি কি হয়েছে গোবেটা চেপে যাচ্ছে।
ফোন বাজতে বিশু কানে লাগিয়ে বলল,কি ব্যাপার...হ্যা চলে গেছে...আমি কিকরে বলব...কি মুশকিল আমাকে কি বলে গেছে...ঠিক আছে তাড়াতাড়ি ফিরবো...রাখছি?
কে রে বিশু?
বৈশালী ফোন করেছিল।
ও হেড কোয়ার্রটার!
রনোর কথা সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে।বিশু অবাক হয়ে বলল।
সকলে পরস্পর মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে।আরকণ্যক মেয়েদের সঙ্গে মিশতে পারেনা সাই টাইপ।খুব বেশী মেয়ের সঙ্গে আলাপও নেই।অথচ মেয়েরা ওর খবর রাখে।কোনো সমস্যা হলে মনে করে রনো সমাধান করতে পারবে।পলি সাহাকে রনোই বাচিয়েছিল।ফেসবুকে চ্যাট করে কিসব ছবি দিয়েছিল।সেইসব ছবি দেখিয়ে লোকটা ব্লাকমেইল করতে চাইছিল।ব্যাটাকে রনো এমন ক্যালানি দিয়েছিল আর পলি বৌদিকে ডিস্টার্ব করেনি,ব্লক করে দিয়েছিল।
কানাই ধর অপেক্ষা করবে না।অন্য লোক পেলে নিয়ে নেবে।আরণ্যক বুঝতে পারেনা কি করবে।এখানে কতক্ষণ থাকবে,এরপর দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাবে।চলে যাবে? লিনার কথার অবাধ্য হবার সাধ্য নেই।লিনার মধ্যে দেখেছে মায়ের মমতা।মনে মনে স্থির করে লিনা যা বলবে তাই করবে।
রান্না শেষ করে টেবিল সাজিয়ে ইলিনা ব্রাউন গলা তুলে বলল,খেতে দিয়েছি।
আরণ্যক উঠে বসল।তাকেই ডাকছে মনে হল।বেরিয়ে এসে দেখল টেবিলে খাবার সাজানো।ইলিনার ইঙ্গিতে চেয়ার টেনে বসতেই খাবারের গন্ধ পেতেই পেটের ক্ষিধে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল।বদ্যিনাথের হোটেলে খেতে অভ্যস্থ আরণ্যকের চোখে জল চলে এল।মাথা নীচু করে চোখের জল সামলায়।
ইলিনা অবাক হয়ে বলল,কি ব্যাপার মাথা নিচু করে আছো?
নিজেকে সামলে নিয়ে আরণ্যক চোখ তুলে তাকায়।
অনু সত্যি করে বলতো বউ কি তোমার পছন্দ হয়নি?
এককথা কতবার বলব?
তাহলে আমার দিকে তাকাচ্ছো না অন্যদিকে ফিরে আছো?
আমি চোখ বন্ধ করেও তোমাকে দেখতে পাই,তাকাতে হয় না।
ইলিনা হেসে ফেলে বলল,কথা জিভের ডগায় সাজানো।
দুজনে খাওয়া শুরু করল।ইলিনা দেখল একমনে তৃপ্তিকরে খেয়ে চলেছে কোনোদিকে নজর নেই।এতদিন নিজের জন্য রান্না করেছে।ইলিনার খুব ভাল লাগে।আনুর প্লেটের মাংস শেষ।দুটো চিকেন লেগের একটা নিজের জন্য রেখে আরেকটা ওকে দিয়েছিল। ইলিনা নিজেরটা ওর প্লেটে তুলে দিল।
এমা তুমি কি খাবে?আরণ্যকের খাওয়া থেমে যায়।
তুমি খেলেই আমার খাওয়া হবে।শোণোনি পতির পুণ্যে সতীর পূণ্য?
ঝাহ!যা বোঝাবে তাই বুঝবো আমি কি বাচ্চাছেলে নাকি?আরণ্যক চিকেন লেগ হাতে তুলে বলল,তুমি অর্ধেকটা খেয়ে দাও।
ইলিনা মনে মনে বলে তুমি বাচ্চারও অধম।আনুর হাতটা টেনে মুখের কাছে নিয়ে এককামড়ে একটু কেটে নিয়ে বলল,হলতো?এবার চুপচাপ খেয়ে নেও।
আরণ্যক হা-করে তাকিয়ে থাকে।
কি দেখছো?
তোমাকে দেখি আর ভাবি তুমি কে?
কে আবার, আমি তোমার বঊ।
কবির একটা কবিতার লাইন মনে পড়ল,নহ মাতা,নহ কন্যা,নহ বধূ,সুন্দরী রূপসী হে নন্দনবাসিনী উর্বশী!
ইলিনা শিহরিত হয় বলে,কাব্য করতে হবেনা খাও তো।
মাম্মীর ঘরটা বন্ধ পড়ে আছে।ঐ ঘরে আনুর শোবার ব্যবস্থা করতে হবে।কাল ফর্মটা জমা দিতে পারলেই নিশ্চিন্ত।অন লাইনে উকিলের সঙ্গে কথা হয়েছে।তাহলে ওর মনে দ্বিধার ভাবটা থাকবে না।
শোনো আনু আর তোমাকে দোকান খুলতে হবে না।এবার মন দিয়ে পড়াশুনা শুরু করো।
খাওয়া-দাওয়ার পর ইলিনা বন্ধ ঘরের দরজা খুলে সাফসুরত করতে থাকে।বিছানার চাদর বদলে দেয়।আরণ্যক এসে বলল,কি করছো?
এ ঘরে তুমি শোবে।
আমি এঘরে শোবো?
আনুর কি তাহলে তার সঙ্গে শোবার ইচ্ছে?জিজ্ঞেস করল,তাহলে তোমার কোথায় শোয়ার ইচ্ছে?
আমি স্টাডিরুমেই শুতে পারতাম।
তুমি এখানেই শোবে।
ঠিক আছে তুমি যখন বলছো।
আচ্ছা আনু মিসেস মুখার্জীকে করার পর আর তোমার ইচ্ছে হয়নি?
আমি কি পশু নাকি?
এতে পশুর কি হল?
পশুরাই পাশবিক অত্যাচার করে।তোমাকে বলেছিলাম,কাম যদা ফোস করে ওঠে প্রেম মানবতা করে পলায়ন।
তাহলে তো জন্ম হতো না।
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে হলে আলাদা।
আমি তো তোমার স্ত্রী আমাকে দেখেও তোমার ইচ্ছে হয়না?
আরণ্যকের কান লাল হয় বলে, আমি তো বলেছি তোমার ইচ্ছেই আমার ইচ্ছে।
ইলিনার যোনীর মধ্যে শিরশিরানি অনুভূত হয়।অনেক কষ্টে দমন করে তুমি শুয়ে পড়ো বলে দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।অনুর ককটা দেখার খুব ইচ্ছে।রেজিস্ট্রিটা হলে দেখা যাবে।যা চেহারা খুব ছোটো হবে মনে হয় না।
 
Last edited:

kumdev

Member
452
400
79


একচত্বারিংশতি পরিচ্ছেদ




মন দিয়ে পড়াশোনা করো।তার মানে পরীক্ষা তাকে দিতেই হবে।নিজের থেকে তাকে নিয়েই বেশী চিন্তা।স্টাডি রুম হতে আরণ্যক প্রয়োজনমত বই নিয়ে এল।মোবাইলে ব্যালান্স নেই চার্জও শেষ।পিকলুকে একটা ফোন করার ইচ্ছে হলেও উপায় নেই।
ইলিনা ব্রাউনের মনে আশঙ্কা ছিল তোমার সঙ্গে শোবো বলবে নাতো?বললে আপত্তি করার সাধ্য ছিল না।আনু কি ওকে বউ বলে মেনে নিতে পারছে না?গেলাসে একটু ওয়াইন ঢেলে বিছানায় উঠে বসল।সারাদিন অনেক ধকল গেছে শান্তিতে একটু ঘুমোক।সকাল সকাল উঠতে হবে। কাল অনেক কাজ আছে। রান্না-বান্না শেষ করে বেরোতে হবে।ফর্ম জমা দিয়ে এ্যাডভোকেট গাঙ্গুলীর সঙ্গে দেখা করার কথা।কালকের দিনটা মিটলে স্বস্তি।এক চুমুকে ওয়াইন্টুকু শেষ করে শুয়ে পড়ল ইলিনা ব্রাউন।
খাওয়া-দাওয়ার পর বিশ্বনাথ শুয়ে পড়ল।বৈশালী জিজ্ঞেস করে,কোনো খবর পেলে?
পিকলু ফোন করেছিল নেটোয়ার্ক সীমার বাইরে।কোথায় গেছে কে জানে?
একটা কথা বলব কিছু মনে করবে নাতো?
মনে করব কেন?
তোমাদের ওই নেতা মাইতি লোকটা কিন্তু সুবিধের নয়।
সন্তোষদার কথা বলছে।সন্তোষদাকে নিয়ে সেও অনেক কথা শুনেছে।সাহাবাবুর বিধবা বোন রেণু সাহার সঙ্গে কিসব গোলমেলে খবর কানে এসেছে। অবশ্য যা রটে সব সত্যি নাও হতে পারে।
বিশুকে চুপ করে থাকতে দেখে বৈশালী বলল,কিগো রাগ করলে?
সুবিধের নয় কিকরে বুঝলে?
পুরুষ মানুষের চোখ দেখলেই মেয়েরা বুঝতে পারে।
আমার চোখ দেখে কেমন মনে হয়?
বিয়ের আগে একজনের সঙ্গে প্রেম ছিল,ছ্যাকা খেয়েছে বৈশালী শুনেছে।হেসে বলল,ইউ আর এ গুড বয়।আচ্ছা তোমার বন্ধু রনোর বাবা-মা নেই?
বাবা-মা নেই বলেই তো আজ এই অবস্থা।বিশু দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
ছেলেটা নাকি গুণ্ডা প্রকৃতির?
বিশু হেসে বলল,তুমি তো দেখেছো তোমার কি মনে হয়েছে?মনে পড়লো সাধন সাহা আজ খোজ করছিল।
রনো একবার এসেছিল গ্রীক ভাস্কর্যের মত চেহারা,শান্ত স্বভাব।সুদেষ্ণার ওর প্রতি নজর পড়েছিল।বৈশালী বলল,দেখে সব সময় বোঝা যায় না।
রনোর কথা ভেবে মন খারাপ হয়।সন্তোষদার সঙ্গে কেন যে ঝামেলা করতে গেল।বিশু বলল,রনো একটু ডাকাবুকো ভবিষ্যৎ ভেবে কাজ করেনা।অন্যের বিপদে ঝাপিয়ে পড়ে আপন-পর ভাবে না।এইতো কদিন আগে সাধন সাহার বউ ফেসবুকে ভিডিও কল করে কিসব ল্যাঙ্টা ছবি দিয়েছিল--।
সাধন সাহা জানে না?
কেউ কি হাজব্যাণ্ডকে জানিয়ে এসব করে?
তা হলে তুমি জানলে কি করে?
এইতো পুরোটা শুনলে না--।
আচ্ছা বলো বলো।
তারপর সেই লোকটা ছবিগুলো দেখিয়ে ব্লাক মেইল করতে চাইছিল।দশ হাজার টাকার এক পয়সা কম হবে না।অত টাকা কোথায় পাবে?
পলি বৌদি তখন রনোকে সব বলে। পলিবৌদি টাকা দেবার নাম করে চালতা বাগান পার্কে দেখা করতে বলে।
লোকটা এসেছিল?
আসবে না মানে দশ হাজার টাকার লোভ।রনো এমন ক্যালানি দিয়েছিল মোবাইলের সব ছবি ডিলিট করিয়ে তবে ছেড়েছে।তারপর বাছাধন আর বিরক্ত করেনি।
স্বামী থাকতে কেন যে এসব করে বুঝি না।
বাদ দাওতো ওসব।বিশু বউকে নিজের দিকে টানে।বৈশালী বুঝতে পারে নাইটীটা উপর দিকে তুলছে।বলল,এখন করবে নাকি?
কেন তোমার আপত্তি আছে?
করলে তাড়াতাড়ি করো আমার ঘুম পাচ্ছে।বৈশালী পা-দুটো ভাজ করে গুদ মেলে দিল।
বউভাতের দিনের কথা মনে পড়ল।বন্ধুরা একটু ঠাট্টা তামাশা করে বিদায় নিতে বিশু খাটে এসে পাশে শুয়ে পড়ল।শুয়ে ঘুমাবে নাকি?টের পেল হাতটা কাপড় তুলছে। সেদিন এত ভূমিকা নয়।একটু ভয়-ভয় করছিল এত ছোটো ফুটোর মধ্যে কতবড় কে জানে।দাতে দাত চেপে অপেক্ষা করছিল।আবছা আলোয় দেখল ইঞ্চি পাচেক লম্বা হবে ভিতরে ঢুকবে ভেবে শিউরে উঠেছিল।এখন মনে হয় আরো বড় হলে ভাল হতো।বিশ্বনাথকে তার খারাপ লাগে নি।যা শুনেছে তাতে কিছু মনে করেনি।বিয়ের আগে সব ছেলেই ওরকম একটু-আধটু করে।
নিঝুম রাত রাস্তাঘাট শুনসান।আকাশে মেঘ ভাসতে ভাসতে চলেছে অনির্দেশ যাত্রায়।মেঘের ফাকে তারাগুলো মিট্মিট জ্বলছে।ধীর গতিতে এগিয়ে চলে সময়।রাস্তার ধারে পথ কুকুররা কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে।ঘুমিয়ে পড়েছে সারা পাড়া।
বন্ধ নয় দরজা ভেজানো।উপুড় হয়ে শুয়েছে আরণ্যক। তার চোখে ঘুম নেই।বুকের নীচে বালিশ রেখে কনুইয়ে ভর দিয়ে গভীরভাবে ডুবে আছে ভারতের ইতিহাসে।এমন বিষয় নেই যা ইউপিএসসিতে পড়তে হয়না।স্কুলে ইতিহাস পড়েছে গুপ্ত যুগ মোগল যুগ বিক্ষিপ্তভাবে।এ একেবারে অন্যরকম।মৌর্যযুগ হতে লিখিত কিছু তথ্য পাওয়া যায়।মেগাস্থিনিস ফা-হিয়েনের বিবরন থেকে তাছাড়া কৌটিল্যের অর্থনীতি থেকেও সে সময়ের অনেক কিছু জানা যায়।গান্ধীজীর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হল।তার মন্ত্র ছিল অহিংসা।আরণ্যকের মনে প্রশ্ন জাগে সত্যিই কি তিনি অহিংস ছিলেন?তিনি দূরদর্শী ছিলেন,বুঝেছিলেন সুভাষ থাকলে কোনোদিনই তিনি জাতির জনক হতে পারবেন না।যে কোনো মূল্যে সুভাষকে সরাতে হবে।শুরু হয়ে গেল চক্রান্ত।সুভাষ দেশত্যাগে বাধ্য হলেন।এরপরও কি গান্ধীজীকে অহিংস বলা যায়।মনে মনে হাসে আরণ্যক।এসব কথা লিখলে আর পাস করা যাবে না।একটা ব্যাপারে তার কষ্ট হয়।সুভাষের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ক্যাশ তছরুফের অভিযোগ এনেছিল।হায় ভগবান! দেশসেবার জন্য যিনি আইএএস ত্যাগ করেছিলেন তার বিরুদ্ধে এরকম ঘৃণ্য অভিযোগ!
শেষরাতে ঘুম ভাঙ্গতে উঠে বসে ইলিনা বালিশের পাস থেকে ঘড়ি চোখের সামনে নিয়ে সময় দেখল।চারটে তিরিশ পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে ঘড়ির কাটা।অনেক কাজ আছে উঠে পড়া যাক।বিছানা থেকে নেমে বাথরুমে গেল।কমোডে বসে স্বল্প আলোতেও নজরে পড়ে তলপেটে লেখা ANU.আলতো হাত বোলায় লেখার উপর।আসার সময় মনে হল আনুর ঘরে আলো জ্বলছে।তাহলে কি নেভাতে ভুলে গেছে।আলো জ্বেলে কিভাবে যে ঘুমায়।
পড়তে পড়তে একটা প্রশ্ন আরণ্যকের মনে উকি দিয়ে যায়।পরীক্ষায় যদি অকৃতকার্য হয় লিনা তাকে ত্যাগ করবে নাতো?দিলে দেবে সাগরে বেধেছি ঘর শিশিরে কিবা ভয়।আবার পড়ায় মনোসংযোগ করে।
বাথরুম সেরে বেরিয়ে একবার ভাবল ডাকবে।না থাক,ঘুমোচ্ছে ঘুমোক চা করে ডাকলেই হবে।ইলিনা রান্নাঘরে চলে গেল।চায়ের জল চাপিয়ে দিয়ে ভাবে স্বামি-স্ত্রী আলাদা ঘরে রাত্রি যাপন নট এ্যাট অল নরম্যাল লাইফ।বিয়ের পর থেকেই শরীরে একটা হাহাকার অনুভূত হয়।এভাবে কত দিন চলতে পারে?এই আত্ম সংবরণ তো নিপীড়ণের নামান্তর।আনু যদি কিছু নাও করে তাহলেও এই সংসারের ভার বহণ তার কাছে অসাধ্য নয়। তবে কেন এই কৃচ্ছতা?পরক্ষণে মনে হল আনুর মধ্যে যে হীনমন্যতা বোধ তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য তাকে কিছু একটা তো করতেই হবে।এতদিন ততটা নয় আজ এক ছাদের নীচে থাকার জন্য সম্ভবত শরীরে ক্ষিধেটা তীব্রতর রূপ নিয়েছে।
একটা ট্রেতে দু-কাপ চা নিয়ে ভেজানো দরজার ফাঁকে উকি দিয়ে অবাক সারারাত জেগেছিল নাকি!ভিতরে ঢুকে বলল,তুমি ঘুমাও নি?
আরণ্যক উঠে বসে হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিয়ে হেসে বলল,তুমি বললে পরীক্ষায় বসতে হবে।
ইলিনা ট্রেটা পাসে নামিনে রেখে খাটের একপাশে বসে বলল,তাই বলে প্রাণপাত করতে হবে?দরকার নেই পরীক্ষার।
লিনা বিশ্বাস করো রাতজেগে পড়া আমার বরাবরের অভ্যেস।আমার কিচ্ছু হবে না।সব পরীক্ষার আগে আমি রাত জেগেই পড়েছি।
তুমি সারারাত জেগে পড়বে আর আমি পাশের ঘরে ঘুমাবো--আমার খারাপ লাগবে না?
আমার বউয়ের একটা সাধ আমি পূরন করতে পারব না আমার বুঝি খারাপ লাগবে না?
আনুর মুখে আমার বউ কথাটা শুনে ইলিনার ঠোটে হাসি ফোটে।
লিনা একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
ইলিনা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলল,কি এমন কথা যে অনুমতি নিতে হবে?
যাক বাদ দাও ফালতু কথা।
কথা মনে চেপে রাখবে না এতে মনের অনাবিলতা নষ্ট করে।
তুমি সুন্দর বাংলা বলো।
কথা ঘোরাবে না কি জানতে চাইছিলে বলো।
সিরিয়াস কিছু নয়।ধরো আমি যদি অকৃতকার্য হই তাহলে তুমি আমাকে ছেড়ে দেবে নাতো?আরণ্যক মাথা নীচু করে থাকে।
ইলিনা মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।মনে পড়ল একটা গানের কলি--তোমায় হৃদ মাঝারে রাখিব ছেড়ে দেব না \ ছেড়ে দিলে সোনার গৌর আর তো পাবো না।হাত বাড়িয়ে চিবুক ধরে আনুকে টেনে বুকে চেপে ধরল।আরণ্যক দু-হাতে জড়িয়ে নরম স্তনের উপর মাথা রাখল।ইলিনা পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বলল,গড মেড ইউ ফর মি অ্যান্ড মি ফর ইউ।এখন ছাড়ো,আমার অনেক কাজ আছে।
আরণ্যকের কোনো কথা কানে যায় না।সে অন্য জগতে হারিয়ে গেছে।ইলিনাকে প্রাণপণ চেপে ধরে থাকে।
কি হল রান্না বান্না করতে হবে না?ছাড়ো সোনা।
 
  • Love
Reactions: Nadia Rahman

kumdev

Member
452
400
79
দ্বিচত্বারিংশতি পরিচ্ছেদ




মনে পড়ল মা আমাকে জড়িয়ে ধরিয়েছিল আমিও মাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম প্রাণপণ।তবু একদিন মা চলে গেল,ধরে রাখতে পারিনি।
মাধ্যমিকের পর আমি বাবার স্কুলে ভর্তি হলাম। বাবা অর্কপ্রভ সোম ইংরেজী শিক্ষক।গম্ভীর প্রকৃতি মনে পড়েনা কখনো হাসতে দেখেছি।স্কুলটা ছেলেদের কিন্তু এগারো-বারো ক্লাস কো-এজুকেশন।মেয়েদের ক্যারিশ্মা দেখাবার একটা প্রবণতা থাকা স্বাভাবিক।সন্তু একটু হিরো টাইপ।কয়েকটা ছেলে নিয়ে একটা দল পাকিয়ে ফেলেছে।একদিন সন্তুর সঙ্গে ঝামেলা হয়ে গেল।বাসায় ফিরে মায়ের সঙ্গে গল্প করছি।বাবা বাড়ী ফিরতেই ডাক পড়ল।
দ্যাখ বাবা কেন ডাকছে।মা বলল।
কেন ডাকছে সেতো আমি জানি।ধীর পায়ে বাবার কাছে গিয়ে দাড়ালাম।
স্কুলে এইসব করতে পাঠিয়েছি?
কি করেছি?
জানোনা কি করেছো?
না বললে কি করে জানবো।
তুমি সন্তুকে মেরেছো কেন?
ও জবার সঙ্গে অসভ্যতা করেছে।
মাস্টার মশায় আছেন তুমি কে?
তখন অফ পিরিয়ড ছিল।
তাই তুমি ওকে মারবে?
অন্যায় দেখলে চুপ করে থাকবো?
সেজন্য তুমি ওর গায়ে হাত তুলবে?
ও আমার বাপ তুলে গাল দিয়েছিল।
মুখে মুখে তর্ক করবেনা।ছেলেটার ঠোটের কষ দিয়ে রক্ত গড়াচ্ছে--এভাবে কেউ মারে?
আমি কেবল একটা চড় দিয়েছি,ও পড়ে গেলে কি করব?
অর্কপ্রভ রাগ সামলাতে পারেন না।রাস্কেল মুখে মুখে তর্ক করা হচ্ছে বলে ঠাষ করে এক চড় কষিয়ে দিলেন।
কথাকলি ছুটে এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,এতবড় ছেলের গায়ে কেউ হাত দেয়!
শোনো কলি তোমার ছেলে বড় হয়ে গুণ্ডা হবে এই বলে দিলাম।
আমার ছেলে তোমার ছেলে নয়?
সেকথা অস্বীকার করব কিভাবে।তোমার আস্কারাতে ছেলেটা দিন দিন গোল্লায় যাচ্ছে।
বছর বছর পাস করছে আর কি করবে?
পাস করছে,রেজাল্ট দেখেছো?অমন পাস করার চেয়ে ফেল করা ভালো।
আরণ্যক গালে হাত বোলায়।রান্না ঘর থেকে খুন্তি নাড়ার শব্দ আসছে।কি দেখে ইলিনা তাকে পছন্দ করল কে জানে।লিনা পরিশ্রম করতে পারে বটে। খাট থেকে নেমে আরণ্যক ধীরে ধীরে রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ায়।ইলিনার পিছনে গিয়ে দু-কাধে হাত রাখল।
তুমি ঘুমাও নি?এক্টু টিপে দাও তো।পিছনে না ফিরেই ইলিনা বলল।
আরণ্যক ধীরে ধীরে টিপতে থাকে।বেশ ভালোই লাগছে।স্পঞ্জের মত নরম শরীর।
একটা সুখানুভূতি কাধ হতে সারা শরীরে চারিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরেই ইলিনা বলল,থাক হয়েছে।তুমি স্নানে যাও।আমার রান্না হয়ে এল তোমার পর আমি যাবো।বাথরুমে তোয়ালে আছে।
আরণ্যক স্নানে চলে গেল।ইলিনার খারাপ লাগে।ঘরে তরি তরকারি কিছু তেমন নেই।আজ বেরিয়ে বেশী করে মাছ-মাংস নিয়ে আসতে হবে।যা বলছি তাই শুনছে স্বামীর সুলভ আধিপত্যের ভাব নেই।ইলিনার মনে হল মানুষ চিনতে তার ভুল হয়নি।রান্না শেষে গোছগাছ করতে থাকে।তোয়ালে পরা খালি গা আরণ্যক এসে বলল,কমপ্লিট।
ইলিনা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।বুক থেকে কোমর অবধি ইংরেজি V- অক্ষরের মত নেমে এসেছে।এই বুকে নিশ্চিন্তে মাথা রাখা যায়।
ইলিনা বলল,স্নান হয়ে গেল?যাও কাপড় বদলে এসো।আমি স্নান করে এসে খেতে দেবো।আমাকে বেরোতে হবে।
ইলিনা ব্রাউন বাথরুমে ঢুকে গেল।আজকের কাজগুলো মনে মনে ছকে নিল।ফর্ম জমা দেওয়া এয়াডভোকেট গাঙ্গুলীর সঙ্গে কথা বলা।
আয়না নিজের প্রতিরূপে চোখ পড়তে নিজেকে উলঙ্গ করে দেখতে থাকে।নিজের বউকে কাছে পেয়েও আনু কিভাবে নির্লিপ্ত থাকে।এই শরীরের কোনো আকর্ষণ কি বোধ করেনা? মিসেস মুখার্জীর সঙ্গে মিলিত হয়েছিল সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধা ঠিক আছে কিন্তু নিজের বউ?তলপেটে লেখার উপর হাত বোলায়।
পরীক্ষা শেষ হতে দেড় দু-মাসের ধাক্কা।এতদিন অপেক্ষা করতে হবে?কেমন দিশাহারা বোধ হয়।শাওয়ার খুলে নীচে দাড়িয়ে পড়ে।উষ্ণ জলের ধারা আছড়ে পড়ে।
স্নান সেরে টেবিলে খাবার সাজিয়ে ইলিনা ডাকে,খাবে এসো।
আরণ্যক আসতে জিজ্ঞেস করে,তুমি গিজার চালাও নি?
কিভাবে চালায় আমি জানিনা।
আচ্ছা তুমি কি আমাকে বলবে তো।ঠাণ্ডা জলে স্নান করলে?
আমার অভ্যেস আছে।
অভ্যেস বদলাতে হবে।
কোনো জবাব নাদিয়ে আরণ্যক মুখবুজে খেতে থাকে।স্বামী-স্বামী বলছে আবার শাসন করছে।স্বামীদের কেউ এভাবে শাসন করে জম্মে শোনেনি।
শোনো আমি বেরোলে তুমি বিশ্রাম করবে।তোমার তো রাত জেগে পড়ার অভ্যেস।আর বারান্দায় বেশী যাবেনা।গেলেও খেয়াল রাখবে কেউ যেন তোমাকে দেখতে না পায়।
দেখলে কি হবে?
তুমি এখানে আছো জেনে যাবে।
আমার যেখানে ইচ্ছে থাকব তাতে কার কি?তুমি কি ভেবেছো সন্তোষ মাইতিকে আমি ভয় পাই?
উফস কি বললাম কি বুঝলো।ইলিনা ব্রাউন বুঝিয়ে বলে,খালি গুণ্ডামী! শোনো ভয়-ডরের কথা নয়।আমি চাইছি পরীক্ষার আগে কোনো ঝামেলা না হোক।তারপরে তো আমিই আমার স্বামীকে পাশে নিয়ে বুক ফুলিয়ে চলব।
বাবার কথা মনে পড়ল।বড় হয়ে গুণ্ডা হবে। আরণ্যকের মজা লাগে লিনার বুক ফুলিয়ে চলার কথা শুনে।
কি হল বুঝেছো?
বুঝেছি আত্মগোপন করে থাকতে হবে।
খাওয়া শেষ করে উঠে পড়ল আরণ্যক।ইলিনা বাসনপত্র গোছাতে গোছাতে ভাবে আনুর কি রাগ হয়েছে।আত্মগোপন কথার মধ্যে একটা অভিমানের সুর। বয়স ওকে স্পর্শ করতে পারেনি।বাচ্চাদের মত অভিমানী।ইলিনা রান্না ঘরের কাজ সেরে বেরোবার জন্য প্রস্তুত হয়।আজকের কাজগুলো মিটলে স্বস্তি।বেরোবার আগে ঘরে গিয়ে আরণ্যকের মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,লক্ষী হয়ে থেকো সোনা।
ইলিনা ব্রাউন বেরিয়ে যেতে আরণ্যকের খুব একা বোধ হয়। এভাবে লোকচক্ষুর আড়ালে তাকে কতদিন থাকতে হবে?মুক্ত বিহঙ্গের মত ঘুরে বেড়ানো স্বভাব তার।বিশু চুনী পিকলুরা কি দোকানের সামনে আড্ডা দেয়।দোকানে এখন কে বসে নাকি দোকান বন্ধ থাকে। ভাবতে ভাবতে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ল।
 
  • Like
Reactions: Nadia Rahman

Nadia Rahman

Love letters to the globe
134
139
44
অসাধারণ ❤️
 
Top