পার্ট -১
কোরানের শেষ হয়েছে দুই মাস হল। করোনার কারনে বাবার ছয় মাস ধরে চাকরি নেই। বাসা ভাড়া বাকি চার মাসের। বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক। ভাড়ার জন্য তেমন প্রেসার দেন নি। কিন্তু , অবশেষে বাড়িওয়ালা বাবাকে জানিয়ে দিলেন তিনি নতুন টু-লেট দিবেন । বাবা নতুন বাসা দেখা শুরু করলো। আমাদের ছোট পরিবার ।আমি ,আম্মু আর বাবা। আমাদের ছোট বাসা হলেই চলে। যদিও এই বাসাটা অনেক বড় ছিল। ছোট বাসা তো পাওয়া যায় আর যে বাসা গুলো পাওয়া যাচ্ছিল তা নেওয়ার আর্থিক অবস্থা বাবার নেই। এদিকে আমাদের বাসা ভাড়া হয়ে গেল । বাবা আর কোন উপায় না পেয়ে সাবলেট উঠার কথা আম্মুকে বলল। আম্মু অনেক পর্দাশীল। বাইরে গেলে সবসময় বোরখা হিজাব পরে। আম্মু কিছুতেই সাবলেট থাকতে রাজি হল না। বাবা অনেক বুঝিয়ে আম্মুকে রাজি করালো। কথা দিল চাকরি পেলেই নতুন বাসায় উঠার। আম্মু আর উপায় না দেখে রাজি হল। কিন্তু, সাবলেটও পাওয়া যাচ্ছিল না। বাড়িওয়ালা জানালেন সামনের মাসের এক তারিখে নতুন ভাড়াটিয়া উঠবে। বাবা একটা নতুন বাসা দেখে নিজেই সাবলেটের জন্য ফেসবুকে পোস্ট দিল। অবশেষে সাবলেট পাওয়া গেল। আমরা এপ্রিলের ত্রিশ তারিখ বাসা চেঞ্জ করলাম। বাবা আমাদের অনেক মালপত্র আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়ে নতুন বাসায় উঠলাম। কারণ এগুলো নতুন বাসায় জায়গা হবে না আর টাকারও দরকার ছিল। ওই একই দিনে সাবলেট পরিবারও আসলো নতুন বাসায় উঠার জন্য। বাসার সামনে দুই পরিবারের দেখা হল। বাবা আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
বাবা: উনি বিমল দ । ভাসানটেক থানার এসআই।
বাবা আমাকে আন্কেল- আন্টি বলে ডাকতে বলল। আমি উনাকে আন্কেল বলেই ডাকতাম। আন্কেলও উনার পরিবারের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিল।
আন্কেল: সালাম, ইনি আমার মিসেস আর আমার ছোট মেয়ে মিমি। আর বড় ছেলে কলেজে গেছে... চলে আসবে। মিমি আমার চেয়ে এক বছরের ছোট।ওর বয়স পাঁচ বছর। আমার সাথে মিমির কিছুক্ষণের মধ্যেই ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেল। বাবা আর আন্কেল মালপত্র,আসবাবপত্র নামাতে শুরু করলো।
বাবা: বিমল দা, আপনাদের পুলিশের তো সরকারী কোয়াটার দেয়। তাহলে আপনারা কেন ভাড়া বাসায় থাকছেন?
আন্কেল: আর, সরকারী কোয়াটার...। মুরগির খুপরির থেকেও ছোট বাসা। ছিলাম কিছুদিন কষ্ট করে। কিন্তু, ছেলে বড় হচ্ছে, মেয়েও আছে। তাই ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে।
আম্মু আর আন্টি আমাদের নিয়ে উপরে ফ্ল্যাটে উঠলো। চার তলায় আমাদের বাসা। ভিতরে ঢুকলাম। সামনে বড় স্পেস আর ডানদিকে পর পর তিনটি রুম। দুটো বেডরুম। বেডরুমের সাথে দুইটা বাথরুম আছে কিন্তু রুমের বাইরে। একটা সামনে দিকে ঢুকতেই আর আরেকটা ভিতরের দিকে । দুই বেডরুমের মাঝখানে একটা ছোট রুম আছে। ভিতরের বেডরুমের পাশেই রান্নাঘর। বাসায় একটাই কমোন বারান্দা , বেশ বড় । দুই বেডরুম দিয়েই যাওয়া যায়। আর মাঝের রুমে জানালা দিয়ে বারান্দা দেখা যায়। আমি আর মিমি বারান্দা দিয়ে এ রুম থেকে ঐ রুমে দৌড়াদৌড়ি করে খেলছিলাম।
আম্মু: বৌদি, আপনি বলেন... আপনারা কোন রুম নিবেন?
আন্টি: আমরা সামনের বেডরুমই নেই। ভিতরের বেডরুমের পাশে রান্নাঘর.. গরম লাগবে।
আমরা ভিতরের বেডরুম নিলাম। আমাদের এক রুম আর আন্টিদের দুটো রুম। ঐ দিন সারা দিন গেল ঘর গোছগাছ করতে। বিকালে মিমির দাদা আসলো কলেজ থেকে। মাঝের রুমে থাকবে সে। আমিও মিমির দেখাদেখি নবীন দা বলতাম। আগে কখনো এভাবে থাকা হয়নি তাই আম্মু একটু অস্বস্তি বোধ করছিল। আস্তে আস্তে মিল হয়ে গেল। এক সাথে চা , নাস্তা, গল্প করে। আম্মু বাসায় সবসময় সালোয়ার কামিজের উপর বড় আবায়া পরে মাথা থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখতো। আর , আন্কেল, নবীনদা বাসায় না থাকলে সালোয়ার কামিজ পড়ে থাকতো নরমাল ভাবেই। কারণ আবায়া পরে কাজ করতে সমস্যা হত , ঘেমে একাকার হয়ে যেত।
সকালে বাবা চাকুরী খুঁজতে বেরিয়ে যেত । আন্কেলও উনার কাজে আর নবীনদা কলেজে। আন্কেল মাঝে মাঝে দুপুরে খেতে আসতো। আর নবীনদা বিকালে বা সন্ধ্যায় আসতো । বাসায় আমি, মিমি,আম্মু আর আন্টি থাকতাম। আমার আর মিমির স্কুল এখনো বন্ধ। তাই আমারা সারাদিন এক সাথে খেলতাম। বিকালে নবীন দা আসলে সে আমাদের সাথে খেলতো , আমাদের পড়াতো। আন্টি আর আম্মু ঘরের কাজ, রান্নাবান্না নিয়ে ব্যস্ত থাকতো।
এক -আধ মাস এভাবেই যাচ্ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে সমস্যা শুরু হল। আম্মু আর আন্টির মধ্যে রান্না, ঘরের কাজ নিয়ে বাঁধতে লাগল। আন্টি একটু অহংকারি, বদস্বভাব ধরনের। তিনি বুঝাতে চাইতেন এই বাসাটা উনাদের। তাই আম্মুকে আন্টির কথা শুনে কাজ করতে হবে। আম্মু শান্ত স্বভাবের তাই আন্টির কথার উত্তর দিত না। কিন্তু, তবুও আন্টি কথা শুনাতে কোন ছাড় দিতেন না। আম্মু বাবাকে একদিন এসব বলতেই...
বাবা: একটু মানিয়ে নেও । আমি এখনো চাকরি পাচ্ছি না। বিমল দার সাথে কথা হয়েছে। উনি এ মাসের ভাড়া দিয়ে দিবেন বলেছেন। আমি টাকা পেলে উনাকে দিয়ে দিব। ভাবছি... আর চাকরি না করে ব্যবসা করবো। তুমি একটু আপোস করে চলো । আমার একটা ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত।
এরপর থেকে আম্মু আর বাবাকে কিছু বলত না। একদিন সকালের দিকে বাবা বাসায় আছে। আম্মু রান্না ঘরে রান্না করছিল। আমাদের রুম থেকে বের হলেই আন্টিদের বাথরুম সামনাসামনি। বাবা রুম থেকে বের হচ্ছিল। তখনই আন্টি গোসল করে ভেজা কাপড় পরে বের হয়ে আসলো । বাবা আর আন্টি চোখাচোখি হলো। বাবা ঘুরে রুমে চলে আসলো । আন্টিও রুমে চলে গেল। আন্টি সবসময় এমন করে ভিজা কাপড়ে বের হয় , এভাবেই বারান্দায় যেয়ে কাপড় মেলে দেয়। আম্মু রান্নাঘর থেকে দেখলো আন্টির বাবার সামনে এভাবে আসা। পরে , আন্টির রুমে গেল।
আম্মু: বৌদি, আসতে পারি ?
আন্টি: হ্যাঁ.. বলেন।
আম্মু: বৌদি, আপনি এভাবে গোসল করে ভেজা কাপড়ে বের হন । বাবুর বাবা তো বাসায় থাকতে পরে ... এটা কি ঠিক?
আন্টি: তো আমি কি করবো? ... আপনার স্বামীর নজর খারাপ, উনার চরিত্র খারাপ এটা আমার দোষ। ... নিজের স্বামীকে সামলাতে পারে না। আর আমাকে ঠিক বেঠিক বুঝতে আসছে ।
আম্মু: বৌদি,আপনি এসব কি বলছেন..!!
আন্টি: ঠিকই বলছি। আমার বাসায় আমি যেভাবে খুশি থাকবো । আমি কি আপনার মত আলখেল্লা পরে ঘুরব নাকি...!!
নবীন দা কলেজে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছিল। আন্টির চিল্লাচিল্লি শুনে রুমে গেল। আন্টিকে শান্ত করার চেষ্টা করলো । নবীন দা, আন্কেল সবসময় আম্মুকে সাপোর্ট করে। এজন্য আন্টি নবীনদাকে অনেক বকাবকি করে, নবীনদাকে আম্মু ছেলের মতই দেখে । ভালো কিছু রান্না করলে, আন্টি ব্যস্ত থাকলে আম্মু নবীনদাকে খাবার দেয় । আন্টি এগুলো পছন্দ করে না। তবু নবীনদা চুপি চুপি আম্মুর কাছে থেকে নিয়ে খায় । নবীনদা আম্মুকে খালা বলে ডাকে।
নবীনদা : মা , তুমি খালার সাথে কেন এভাবে কথা বলো সবসময়। খালা আপনি যান তো । মায়ের কথা শুনেন না ।
আন্টি চিল্লাতে থাকলো । আম্মু চলে আসলো। নবীনদা কিছুক্ষণ পর চলে গেল। এর কিছুদিন পরে , আমি আর মিমি আমাদের ঘরে বসে খেলছিলাম। আন্টি মিমিকে গোসল করতে ডাক দিল। মিমি আবার এসে খেলবে, তাই ওর খেলনা রেখে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর আন্টি এসে আমাকে বকতে লাগল।
আন্টি: তোর বাবা মা তোকে এইসব শিক্ষায়..? আমার মেয়ের দামী দামী খেলনা গুলো চুরি করে রেখে দিছিস।
আমি: না তো, আন্টি আমি নেই নি।
আন্টি: চুপ, মুখে মুখে মিথ্যা কথা বলে।
আম্মু রান্না ঘরে ছিল। আন্টির চিল্লাচিল্লি শুনে তাড়াতাড়ি আসলো ।
আম্মু: কি হয়েছে বৌদি?
আন্টি: এই যে আপনার ছেলে আমার মেয়ের দামী খেলনা চুরি করে রেখে দেয়।
আম্মু: বৌদি..! এসব কি বলছেন? ওরা ছোট মানুষ। ওরা এক সাথে খেলে । আপনি এগুলো কি বলছেন?
মিমিও আন্টির পিছন থেকে এসে বলল,
মিমি: না মা , আমি রেখে গেছি আবার এসে খেলবো তাই । আন্টি: চুপ... একদম ওকে বাঁচাতে মিথ্যা বলবি না।
আম্মু: বৌদি, আপনি আমার ছেলেকে এভাবে বলতে পারেন না।
আন্টি: নিজের ছেলে চুরি করে...ওকে বাঁচাতে আমার উপর কথা ঘুরাচ্ছেন । আমার মেয়ের কতগুলো দামী দামী খেলনা ছিল। এই বাসায় আসার পর থেকে একটাও পাই না। এখন এই নতুন খেলনাটা চুরি করার ধান্দায় আছে।
আম্মু আমাকে মারতে লাগল । আমার কাছ থেকে খেলনা নিয়ে গেল। আমি কাঁদতে লাগলাম।
আম্মু: আর কোনদিন যদি দেখছি, তুমি মিমির কোন খেলনায় হাত দিছো ...ওর কাছেও যাবা না তুমি। ...এই নেন বৌদি আপনার খেলনা। আর মিমি মা তুমি আর কোনদিন তোমার কোন খেলনা বাবুকে দিবা না।
আন্টি মিমিকে টানতে টানতে নিয়ে গেল। মিমিও কাঁদতে শুরু করলো। রাতে বাবাকে আম্মু সব বলল।
বাবা: দেখো , আমাকে এসব আজাইরা কথা বলতে আইসো না তো। উনি বড় , তোমার ছেলেকে একটু বকছে তো কি হয়েছে...!! তুমি আসছো আবার আমাকে বলতে। এমনিতেই আমি অনেক প্রেসারে থাকি।
আম্মু: তোমার কাছে তো আমাদের সব কথাই আজাইরা মনে হয়।
বাবা শুয়ে পরলো। আম্মুও আমাকে নিয়ে বাবার পাশে শুয়ে পড়লো। মাঝরাতে আমার ঘুম একটু ভেঙে গেল। আম্মু বাবাকে ডাকছে।
আম্মু: এই শুনছো ..এই ঘুরো না এদিকে। বাবু ঘুমাচ্ছে।
আম্মু একটা পা বাবার উপর তুলে দিল। বাবাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিল ।
আম্মু: এদিকে ঘুরো না জান ।
বাবা: ওফ ... সাবিনা..এমন করো না তো। সকালে উঠে বের হতে হবে। ঘুমাতে দেও।
আম্মু আরো জাপটে ধরলো বাবাকে ।
আম্মু: ঘুমাবা তো ... আগে একবার ঘুরো তো । আমার জান....লক্ষীটি ... এদিকে আমাকে দেখ একবার।
বাবা জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল আম্মুকে।
বাবা: কখন থেকে বলছি... কথা কানে ঢুকছে না ..!! শরীরের কি বেশি জ্বালা...
আম্মু আমার উপর এসে পড়লো। আমি ব্যাথা পেয়ে কাঁদতে লাগলাম। আমাকে দেখে বাবা চুপ করে শুয়ে পরলো। আম্মু আমাকে আদর করে আবার ঘুম পাড়িয়ে দিল । আমি বুঝেছিলাম আম্মুর চোখে পানি। সকালে আমি ঘুম থেকে ওঠার আগেই বাবা চলে গেছে। আমাকে আম্মু রুম থেকে বের হতে নিষেধ করেছে । দুপুরে আম্মু রান্না শেষ করে রুমে আসলো । দরজা লাগিয়ে দিল। আবায়া খুলে বিছানায় ছুড়ে ফেলল। গরমে ঘেমে গেছে। বিছানায় বসলো আমার পাশে। এমন সময় বেল বাজল, আন্কেল আসলেন মনে হয়। কিছুক্ষণ পর আমাদের রুমের দরজা নক করল।
আন্কেল: ভাবী, আসতে পারি ?
আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া পরে নিয়ে দরজা খুলে দিল।
আম্মু: জী , দাদা.. কিছু বলবেন?
আন্কেল: না .. আমি একটু বাবুর সাথে দেখা করতে আসলাম।
আম্মু: আসেন...
আন্কেল ভিতরে এসে বিছানায় বসে আমাকে একটা বক্স দিলেন। আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে বক্স নিয়ে খুল্লাম। রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি ।
আন্কেল : এটা তোমার জন্য।
আম্মু: না ...না ... বিমল দা ...
আম্মু আমার কাছ থেকে নিয়ে নিতে গেল । আন্কেল বাধা দিলেন ।
আন্কেল: ভাবী, না ... প্লিজ..এটা বাবুর জন্য।
আন্কেল আম্মুর হাত ধরলেন। আম্মু একটু চমকে সাথে সাথে হাত সরিয়ে নিল।
আন্কেল: ভাবী, গতকাল মিমির মা ,..যা করছে তার জন্য আমি খুবই লজ্জিত। আমি ওর হয়ে ক্ষমা চাইছি।
আম্মু: না .. না.. ছি..ছি , বিমল দা, ... আপনি এভাবে বলবেন না।
আন্কেল: না ... ভাবী, মিমির মা খুবই খারাপ কাজ করেছে। আর, আমি ওকে বলে দিছি । ও এরকম আর কোন দিন করবে না । আমাকে মিমি সব বলছে । আমার মেয়েটাও কালকে রাতে অনেক কান্নাকাটি করছে। খাই নাই রাতে । তাই, ওর মা যা করছে...ঐ রাগ আপনি বাচ্চাদের উপর দেখায়েন না।
আম্মু: না ..না ... দাদা। আমার মিমির উপর কোন রাগ নেই। ও তো আমার মেয়ের মত । কিন্তু, বৌদি যেভাবে...
আন্কেল: আমি বুঝতে পারছি। আমি ওর হয়ে ক্ষমা চাইছি।
আম্মু: ছিঃ.. ছিঃ... বিমল দা। এভাবে বলবেন না।
আন্কেল: আপনি আর ওদের একসাথে খেলতে নিষেধ করেন না ।
আম্মু: আচ্ছা । আপনি তো দাদা লাঞ্চ করন নি । বসেন ... আমি খাবার নিয়ে আসি ।
আন্কেল: না ...না ...লাগবে না । মিমির মা ঘুমাচ্ছে। ওকে ডাক দেই ...
আম্মু: বৌদিকে আবার কষ্ট দিবেন কেন? আপনি বসেন আমি আনছি।
আম্মু চলে গেল রান্না ঘরে। আমি মিমির সাথে খেলার জন্য যাচ্ছিলাম। আন্কেল বলল, ও ঘুমাচ্ছে। আম্মু খাবার নিয়ে এল ।
আন্কেল: ভাবী, শুধু শুধু কষ্ট করলেন।
আন্কেল আমাদের বাথরুম থেকে হাত মুখ ধুয়ে নিল।
আন্কেল: আপনারা খাবেন না।
আম্মু: বাবু খেয়েছে। আমি পরে গোসল করে খাব ।
আম্মু আন্কেলের খাবার বেড়ে দিয়ে আন্কেলের সামনে বসলো।
আন্কেল: আপনার খাবার অনেক মজা হয় । মিমির মা আবার জানেন তো এসব পছন্দ করে না।
আম্মু: এভাবে বইলেন না । বৌদি আপনার অনেক ভালোবাসে , যত্ন করে।
আন্কেল: বাবু, তুমি বারান্দায় যেয়ে খেল ।
আমি বারান্দায় চলে গেলাম। কিন্তু, আন্কেল, আম্মুর কথা শুনতে পাচ্ছিলাম।
আন্কেল: কি আর বলবো ভাবী... মিমির মা স্বভাবই খুব স্বার্থপর।
আম্মু: যেমনই হোক... আপনার ছেলে মেয়ের মা ।
আন্কেল: আমার সাথে বিয়েও করছে চালাকি করে। আমার পুলিশের চাকরি হওয়ার পর , বাবা পুরো গ্রামে লোকজন দাওয়াত করে খাওয়ায়। আমার বাবার আবার খুব প্রতিপত্তি গ্রামে। আর, মিমির মা আমার দুঃসম্পর্কের চাচাতো বোন ছিল। আমার পুলিশ হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে জোর করে আমাদের বাসায় পরে থাকতো । মা পছন্দ করতো না , বাবা পছন্দ করতো না। তাও আইসে রান্না করে, মায়ের সাথে সাথে থাকতো । আর এদিকে পুরো গ্রামে ছড়ায় বেরাইলো । আমার সাথে নাকি ওর বিয়ে হবে। পরে , বাবার সম্মানের বিষয় বিয়ে করতে হয়।
আম্মু: হুম... আচ্ছা..যা হওয়ার হয়েছে। ...আর কথায় আছে না যা হয় ভালোর জন্য।
আন্কেল: হুম... সুজন ভাইয়ের কি অবস্থা? চাকরি পাইছে?
আম্মু: না ...বলল, কি ব্যবসা শুরু করবে ।
আন্কেল: ওহ... হ্যাঁ। আমাকেও ব্যবসার লাইসেন্স না কিসের জন্য সাহায্য চাইছিল। আমি বলছিলাম, যতটুকু সম্ভব সাহায্য করবো। পরে তো আর কোন কিছু বলল না...।
আন্কেলের খাওয়া শেষ হলে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে চলে গেলেন। আম্মু সব গুছিয়ে পরিষ্কার করে নিল। বিকালে মিমি উঠার পর আমরা আবার আগের মত খেলা শুরু করলাম। রাতে বাবা আসার পর আমরা খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পরলাম। মাঝরাতে হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল আমাদের। আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া পরে নিয়ে বাবার সাথে বের হল। আমিও পিছন পিছন আসলাম। আন্কেল আর নবীনদা আন্টিকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আন্টি কেমন বেহুঁশ মত হয়ে আছে। বাবা দৌড়ে যেয়ে তাড়াতাড়ি ধরলো ।
বাবা: কি হয়েছে?
আন্কেল: ঘুমের মধ্যে মনে হয় হার্ট অ্যাটাক হইছে।
আম্মু আমাকে আর মিমিকে নিয়ে বাসায় থাকলো । বাবাও উনাদের সাথে হাসপাতালে গেল। আন্টি বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকলেন। আম্মু বাসা থেকে খাবার বানিয়ে নবীন দা কে দিয়ে পাঠাতো। আম্মু আন্কেল, নবীনদা সবার জন্য রান্নাবান্না করতো। তিন-চার সপ্তাহ পর আন্টিকে বাসায় আনা হলো। আন্টির এক সাইড পুরো অবশ হয়ে গেছে। সুস্থ হতে সময় লাগবে। বেডে শুয়ে খাওয়া দাওয়া, হুইলচেয়ারে করে বাথরুমে নিয়ে যেতে হয়। আন্কেল আর নবীনদা শুরুতে কয়েকদিন করলো । কিন্তু, আন্কেল ব্যস্ত থাকে ডিউটি তে। তাই নবীনদা কে করতে হতো । কিন্তু নবীনদা করতে পারতো না। আম্মু সাহায্য করত। আস্তে আস্তে আম্মুই সব কিছু করতে লাগলো। আম্মুই আন্টিকে খাইয়ে দিত, শরীর মুছে দিত , ঔষধ খাওয়ানো সব আম্মুই করতে লাগলো। রাতে মিমি আমাদের সাথে শুতে লাগল। আন্টি অসুস্থ তাই আম্মুই ওর সব দেখাশোনা করত। আমি, মিমি আর আম্মু বেডে ঘুমাতাম। আর , বাবার জন্য আম্মু নিচে বিছানা করে দিত। আন্কেল আম্মু আর বাবাকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাতে। একদিন সকালে আম্মু কাপড় ধুয়ে বারান্দায় মেলে দিচ্ছিলো। আন্কেল আসলো আম্মুর কাছে। আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া ঠিক করে নিল ।
আম্মু: কিছু বলবেন.. দাদা?
আন্কেল: না...মানে ...
আম্মু: বৌদির কি অবস্থা? ... ডাক্তার কি বলছেন?
আন্কেল: আগের চেয়ে ভালো। কিন্তু, সুস্থ হতে সময় লাগবে।
আম্মু: আপনি মন খারাপ করবেন না। বৌদি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।
আন্কেল: হুম...দেখা যাক কি হয়..!! ইয়ে ....মানে ... ভাবী...
আম্মু: জি ... দাদা... কিছু বলবেন?
আন্কেল: আপনার কোন কাপড় হারানো গেছে...? ...না .. আমি এখন ওর কাপড় ধুয়ে দি । ...তো ভুল করে মনে হয় আপনারটা আমি নিয়ে চলে গেছি ।
আম্মু: ওহ... আমার কোন ড্রেস তো হারায়নি। ...কি জানি...হয় তো খেয়াল করিনি।
আন্কেল: ... দাঁড়ান... নিয়ে আসছি।
আন্কেল একটা মেরুন ব্রা এনে আম্মুকে দিল । আম্মু দেখে লজ্জা পেয়ে গেল। আম্মু কাঁপা কাঁপা হাতে অস্বস্তিতে ব্রাটা নিল ।
আন্কেল: সরি ... ভাবী.. ভুল করে.. মিমির মায়ের ভেবে....
আম্মু: না... ঠিক আছে।
আম্মু মাথা নিচু করে তাড়াতাড়ি চলে আসলো । আন্কেল ডিউটিতে চলে গেল। আম্মু রান্না শেষ করে, আন্টির গা হাত পা মুছিয়ে, আন্টিকে খাইয়ে দিল। তারপর আমাদের দুজনকে খাইয়ে দিল। সন্ধ্যায় নবীনদা এসে আমাদের পড়তে বসালো । আন্কেলও চলে আসলো । আম্মু সবাইকে রাতের খাবার খেতে দিল।
আন্কেল: ভাই আসে নাই?
আম্মু: না ... ওর আসার ঠিক নাই । আপনারা খেয়ে নেন ।
আম্মু আমাকে আর মিমিকে খাইয়ে ঘুম পারাই দিল। বাবা আসতে আসতে মনে হয় অনেক রাত হল। রুমের আলো জ্বল্লে একটু ঘুম ভেঙ্গে গেল। আম্মু বাবাকে খাবার খেতে দিল।
আম্মু: এত রাত কেন ?
বাবা: আর বলো না ... ব্যবসার জন্য এদিক সেদিক অনেক ছুটাছুটি করতে হচ্ছে। কালকে সকালে ঢাকার বাইরে যাচ্ছি।
আম্মু: ওমা..সেকি ... হঠাৎ..! ... কোথায় যাচ্ছ ?
বাবা: এই ..অল্প দিনের জন্য... ঠিক নাই... কয়েকটা জায়গায় ঘুরতে হবে । তবে কাল যাব ময়মনসিংহ।
খাওয়া দাওয়া শেষে আম্মু সব গুছিয়ে এসে আলো নিভিয়ে বাবার পাশে শুয়ে পড়লো।
বাবা: কি হলো ?
আম্মু: কিছু না... তোমার পাশে শুই।
বাবা: না ...যাও উপরে বাচ্চারা আছে .. ওদের সাথে শোও।
আম্মু: বাচ্চারা ঘুমাচ্ছে।
আমি চুমু খাওয়ার আওয়াজ পেলাম। আম্মুর কন্ঠ কেমন পাল্টে গেল।
আম্মু: আমাকে কত দিন তুমি আদর কর না ...জান ...
বাবা: সাবিনা...!!...আমাকে একটু ঘুমতে দেও ...যাও তো যাও...। আমাকে ভোরে উঠে বের হতে হবে।
আম্মু উপরে এসে চুপচাপ শুয়ে পরলো। পরের দিন আমি ঘুম থেকে উঠার আগেই বাবা চলে গেল। মিমি আমাকে ডাক দিল ।
মিমি: উঠো ...উঠো ... খালা বলেছে ... তুমি তাড়াতাড়ি না উঠলে । তোমাকে গরম পানি মেরে দিবে ।
আমি উঠার পর আম্মু আমাদের নাস্তা করিয়ে দিল। তারপর আমি আর মিমি খেলতে থাকলাম। আর , আম্মু আম্মুর কাজে ব্যস্ত থাকলো । রান্নাঘর আর আন্টির রুমে দৌড়ে বেরালো। সন্ধ্যায় নবীনদা আসার পর কিছু সাহায্য করলো । আর , আন্কেল আসার পর আম্মু রুমে এসে রেস্ট নিল । আম্মু কিছুক্ষণ মোবাইলে সময় কাটালে। মিমি আর আমি পাশে বসে খেলছিলাম । কিছুক্ষণ পর উঠে রাতর খাবার দিল সবাইকে। আমাদেরকেও খাইয়ে দিল।
পরের দিন নবীনদা আর আন্কেল দুজনই নাস্তা করে বের হয়ে গেল। আম্মু দুপুরে আন্টির শরীর মুছে দিচ্ছিল। এমন সময় বেল বাজল। আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া পরে নিয়ে, যেয়ে দরজা খুলে দিল। আন্কেল আসলেন। আম্মু আন্টিকে একটা চাদর দিয়ে ঢেকে মেক্সি খুলে ফেলল। নতুন মেক্সি পরিয়ে দিতে লাগল। আন্কেল আম্মুকে সাহায্য করলেন। আন্কেল আন্টিকে তুলে ধরতেই চাদর সরে গেল। আন্কেল আর আম্মু একে অপরের দিকে তাকালো। আম্মু লজ্জায় চুপচাপ কাপড় পড়িয়ে দিল ।
আম্মু: আপনি হাত মুখ ধুয়ে নিন .. দাদা । আমি খাবার আনছি।
আম্মু খাবার নিয়ে গেল। আন্কেল খেতে বসলেন। আম্মু বারান্দা থেকে কাপড় তুলতে গেল ।
আন্কেল: বাচ্চারা খেয়েছে?
আম্মু কাপড় তুলে এনে ভাজ করতে লাগলো।
আম্মু: হ্যাঁ.. ওদের অনেক আগে খাইয়ে দিয়েছি ।
আন্কেল: ভাবী, আপনি না থাকলে কি করে যে ... মিমিকে , নবীনকে ওর মায়ের অভাব বুঝতে দিচ্ছেন না।
আম্মু: এভাবে বলছেন কেন? ওরাও আমার ছেলে মেয়ে।
আন্কেল: ধন্যবাদ ভাবী...।
আম্মু মুচকি হাসলো।
আম্মু: দাদা... বলছিলাম... কাপড় গুলো তে ডিটারজেন্ট পাউডার দেন না ...!
আন্কেল: ... হ্যাঁ... কেন..? কি ... হয়েছে..!!
আম্মু: না... মানে...কাপড় গুলো ভালো মত পরিস্কার হচ্ছে না। ঐ... আপনার কাপড় থেকে...এখনো গন্ধ আসছে।
আন্কেল খাওয়া শেষ করে। হাত ধুয়ে নিলেন।
আন্কেল: ও... আমার কোনটি ... গেঞ্জি?
আম্মু: না ...ইয়ে ... আপনার...ঐ....
আন্কেল : .....জি ... কোনটা ?
আম্মু: ইয়ে....মানে ... আপনার আন্ডারওয়্যার...
আন্কেল: ..ও...সরি ...না ... আসলে সত্যি কথা বলতে কি... ভাবী... আমি ডিটারজেন্ট পাউডার খুব কম দি ...আর বেশিভাগ সময় দেই না ...। ডিটারজেন্ট দিয়ে ভিজিয়ে রাখা , ফেনা বেশি হলে বার বার ধুতে হয় ..। তাই শুধু পানি দিয়েই....।
আম্মু আন্কেলের কথা শুনে হাসতে লাগল।
আম্মু: ... আপনি... দাদা... পারেন ও..। কিন্তু, এভাবে তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন। ... ময়লা কাপড় থেকে রোগজীবাণু ছড়াবে। ... আর বৌদি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে বাথরুমে কাপড় জমা হইছে ... ওগুলো তো ধোয়াই হচ্ছে না।.... মাত্র এক দুইটা করে কাপড় ধোন ..! আর জমা হয়...সাত/আটটা করে। আর আপনার এই ইউনিফর্ম লাস্ট কবে ধুইছেন...কে জানে...।
আন্কেল: হুম...দেখি... একটা কাজের মেয়ে রাখতে হবে...যা বুঝতাছি।... আপনারও সাহায্য হবে । আর ...এই কাজগুলো করে দিবে।
আম্মু: হুম... এটা হলে সবচেয়ে ভালো হয়। ...আর... আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না । ..আমি ধুয়ে দিব আপনাদের কাপড়গুলো।
আন্কেল:... ছিঃ.. ভাবী....না .. আপনি যা করছেন আমাদের জন্য...তার জন্য আমি ঋণী...। ..আর লজ্জা দিবেন না। ... আমি দেখি নবীন কে বলবো .. ধুয়ে দিতে ।
আম্মু: দাদা...কি বলছেন কি ...আমরা একসাথে থাকি ... একটা পরিবারের মত । ... আর নবীন ছোট মানুষ...ও যথেষ্ট করে । ...ও তো নিজের কাপড় নিজেই ধোয় । ..ও কলেজ থেকে এসে বাচ্চা দের সময় দেয়...ওর নিজের পড়াশোনা আছে। আপনাদের দুজনেরই তো কাপড়...ঐ একসাথে ধুয়ে ফেলব ...।
আন্কেল: ভাবী, আমি কি বলে যে আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাবো... আমি জানি না..।
আম্মু: হইছে... আর কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে না।
আন্কেল পকেট থেকে একটা ছোট খাম বের করলেন।
আন্কেল: ভাবী, আমার এই ছোট অনুরোধ আপনাকে রাখতে হবে।
আন্কেল আম্মুকে খামটা দিল।
আম্মু: কি ..এটা ..?
আন্কেল: ... কিছু টাকা আছে।
আম্মু: ... দাদা...কি বলছেন কি..! কখনোই না..।
আন্কেল আম্মুর হাত ধরে হাতের মধ্যে খামটা ধরিয়ে দিলেন। আম্মু কিছুতেই নিবে না , হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো।
আম্মু: ... আপনি কি করছেন..কি ?.. আমি এটা নিতে পারবো না ।
আন্কেল: ভাবী, প্লিজ... আপনাকে নিতে হবে...রিকুয়েস্ট আমার...। আপনি মাত্র বললেন আমারা এক পরিবার... তাহলে আমার ইনকামে ... মিমির মায়ের যেমন অধিকার...। পরিবারের সদস্য হয়ে আপনার ও তো অধিকার..।
আম্মু আন্কেলের হাত থেকে হাত ছুটানোর অনেক চেষ্টা করেও, না পেরে শেষমেশ টাকা নিয়ে নিল। আন্কেল আবার ডিউটি তে চলে গেল। বিকালে নবীন দা আসলো । আম্মু সবার জন্য নুডুলস বানাচ্ছিল । নবীন দা রান্না ঘরে ঢুকে আম্মুকে সাহায্য করতে চাইলো ।
নবীনদা: খালা, দেও আমি হেল্প করি ।
আম্মু: লাগবে না .. তুমি যাও.. আমি চটপট নাস্তা নিয়ে আসছি।
নবীনদা: আরে খালা ...দেও না আমি পারব। তুমি তো সারাদিন রান্না ঘরে ঢুকে থাকো। ...একটু হেল্প করে দি । তাড়াতাড়ি হবে।
আম্মু: আচ্ছা...এই সবজি গুলো কেটে দেও ।
নুডুলস হওয়ার পর আমরা একসাথে বসে নুডুলস খেলাম। রাতে আন্কেল আসার পর আম্মু খাবার দিতে গেল।
আম্মু: কি হয়েছে দাদা..? ..কি নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করছেন ..?
আন্কেল: কালকে একটা মিশন আছে... নাইট ডিউটি। ...কি করবো...? .. রাতে আপনার বৌদির কাছে থাকতে হয় তো ...।
আম্মু: আরে দাদা.. আমি থাকবো .. একটা রাত তো ..। আপনি মিশন টিশনে সাবধানে থাইকেন।
আম্মু আন্কেল, নবীনদা যাওয়ার পর তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করে কাপড় ধুতে ঢুকলো আন্টিদের বাথরুমে ।
অনেকক্ষন ধরে আম্মু কাপড় ধুতে ছিল। দুপুরে আন্কেল চলে আসলো। আম্মু তাড়াতাড়ি রুমে এসে আবায়া পরে দরজা খুলল। তারপর আবার বাথরুমে ঢুকে গেল। প্রায় ঘন্টা খানেক পরে ঘামে, পানিতে ভিজে কাপড় ধুয়ে বের হলো। কাপড় সব বারান্দায় মেলে দিল ।
আম্মু: দাদা...একটু অপেক্ষা করেন.. আমি খাবার দিচ্ছি।
আন্কেল: আরে ... ভাবী আপনি আগে ফ্রেশ হয়ে নেন...। আমি এখন আর যাচ্ছি না ।
আম্মু: ও... আচ্ছা...। ... দাদা আমি আপনাদের বাথরুমে গোসলে ঢুকলাম... সমস্যা নেই তো । আপনি লাগলে আমাদের বাথরুমে যেতে পারেন।
আন্কেল: আরে ...কি বলেন...কি সমস্যা..! আমি একটু জাস্ট আমার ট্রিমার নিয়ে নেই বাথরুম থেকে...।
আম্মু গোসল করে বের হলো আবায়া পরেই । আমাদেরকে খাইয়ে দিয়ে , আন্কেলের খাবার নিয়ে গেল। আম্মু: এই নিন ... দাদা..খেয়ে নিন।
আন্কেল: আপনি ভাবী..?
আম্মু: আমি বৌদি কে খাইয়ে খেয়ে নিব ।
আন্কেল: আপনি খাইয়ে নিন ... তারপর একসাথে খাব ।
আম্মু: আরে ... দাদা... আমি খেয়ে নিব ... আপনি খান..।
আন্কেল: আপনি খাইয়ে দিন ওকে ... আমিও একটু হাতের কাজটা শেষ করে নি ... তারপর একসাথে খাই।
আম্মু আন্টিকে খাইয়ে দিল।
আম্মু: আসুন দাদা...।
আন্কেলের সামনে বসলো আম্মু। একসাথে গল্প করতে করতে খাওয়া দাওয়া করলো। রাতে আন্কেল চলে গেল।
আম্মু: বাবু আজকে তুমি নবীনদার সাথে ঘুমাও ।... আমি আর মিমি আন্টির সাথে ঘুমাবো ...ওই বেডে তো জায়গা হবে না।
আমি প্রথমে রাজি হচ্ছিলাম না । নবীনদা বললো গেম খেলতে দিবে ফোনে , তাই রাজি হলাম। নবীনদা অনেক রাত পর্যন্ত গেম খেলতে দিল । অনেক রাতে আমাকে বলল,
নবীনদা: বাবু , চলো মিমি কি করছে দেখে আসি ..!
আমি : ও তো ঘুমাচ্ছে..।
নবীনদা: হ্যাঁ... এটাই তো মজা আমরা লুকিয়ে যেয়ে দেখে আসবো ... কিন্তু, কেউ জানবে না ।
আমি : আচ্ছা...চলো ।
নবীনদা: কিন্তু, তোমার আম্মু যদি দেখে ফেলে...বলবা আম্মুর কাছে শুতে আসচ্ছো...।
আমি: আচ্ছা..।
আমি নবীনদার হাত ধরে অন্ধকারে আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে, আন্টিদের রুমের সামনে গেলাম। নবীনদা রুমের দরজার হ্যান্ড লক ঘুরাতেই দরজা খুলে গেল। আস্তে করে দরজা খুলে, আমরা রুমে ঢুকলাম। আম্মু বামে আর আন্টি ডানে মাঝখানে বেডে মিমি ঘুমাচ্ছে। নবীনদা আমাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে বলল। নবীনদা আম্মুর কাছে গেল। প্রথমবার আম্মুকে হিজাব ছাড়া, আবায়া ছাড়া দেখলো নবীনদা । আম্মু বাম কাঁধ হয়ে শুয়ে ছিল। আম্মুর দুধের খাঁজ কামিজের উপর দিয়ে দেখা যাচ্ছে। নবীনদা ফোন বের করে আম্মুর কয়েকটা ছবি তুললো মাথার কাছ থেকে , যাতে দুধের খাঁজ দেখা যায়। কামিজর উপর দিয়ে দুধের বোঁটা গুলো বুঝা যাচ্ছিলো। নবীনদা ছবি তুলে আমাকে নিয়ে বের হয়ে আসলো। রুমের দরজা আবার লাগায় দিল । রুমে এসে নবীনদা আম্মুর দুধের ছবি গুলো দেখতে লাগলো। শুধু আজকের না, নবীনদা আম্মুর আরো ছবি তুলছে। আম্মুর রান্নাঘরে কাজ করার, আম্মুর পাছার এরকম অনেক ছবি। এগুলো দেখতে দেখতে আন্টির ছবিও আসলো । আন্টির পুরো নেংটা ছবি। আন্টির দুধ, গুদের, পাছার ছবি। আমি তখন এগুলো জানতাম না। নবীনদা আমাকে শিখিয়ে দিল ।আর এগুলো দেখতে দেখতে আমার কেমন যেন লাগতে লাগলো। নবীনদা বলে দিল এগুলো কাউকে যেন না বলি , মিমিকেও না। আমিও প্রমিজ করলাম কাউকে বলব না। পরের দিন আমার উঠতে অনেক দেরি হলো। নবীনদাও ঘুম । কলেজে যায়নি।আম্মু জিজ্ঞেস করলো সারারাত কি করছি , আমি কিছু বললাম না। আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবা এসেছে। আম্মু দুপুরে খেতে দিল বাবাকে।
আম্মু: কি অবস্থা...? ... কোথায় আছো ..?
বাবা: আমরা তো ব্যবসার মালপত্র আনতাছি .... কিন্তু... টাকার দরকার... তাই ফিরে আসতে হলো... ভাবছি বিমলদার থেকে কিছু টাকা ধার নিব ...।
আম্মু: তুমি কি বলছো ...কি ...বাসা ভাড়ার জন্য এমনি উনাকে অনেক টাকা দিতে হবে... তার উপর আবার ধার ...।
বাবা: ..তো কি করবো....বলো ..! টাকা তো খুব দরকার..।
আম্মু: আমার কাছে কিছু জমানো টাকা আছে... পাঁচ হাজার এর মত... ।
বাবা: ...ও.... আচ্ছা... তাই দেও ... । তাহলে আর বিমল দা থেকে চাওয়া লাগবে না।
আম্মু: তুমি কি এখনই চলে যাবে..?
বাবা: হ্যাঁ... রাতের মধ্যে ময়মনসিংহ পৌঁছাতে হবে...।
আম্মু টাকা বের করে দিল। বাবা আমাদের আদর করে বিদায় নিয়ে চলে গেল। আন্কেল আসলেন বাবা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর। আন্কেলকে অনেক ক্লান্ত লাগছিল। আন্কেল সোজা গোসলে ঢুকলেন। আম্মু মিমিকে গোসল করিয়ে দিল। তারপর আমাকে গোসল করতে ডাক দিল।
নবীনদা: খালা , আমি কি আগে একটু বাথরুমে যেতে পারি ..? ...ঐ বাথরুম ফাঁকা নেই ... বাবা আছে।
আম্মু: হ্যাঁ..যাও ... সমস্যা নেই।
আম্মু নবীনদার রুম গোছাতে গেল। বিছানা ঝাড়ার জন্য ফোন সরাতে যেয়ে দেখলো পর্ণ পোজ করা । আম্মু চুপচাপ রেখে দিল । কিছুক্ষণ পর নবীনদা বের হয়ে আসলো। আম্মু আমাকে নিয়ে বাথরুমে ঢুকল। বাথরুমে বেসিনে সাদা সাদা বীর্য আটকে আছে। আম্মু মুচকি হেসে আমাকে গোসল করাতে লাগলো ।
{ এটি একটি সত্য ঘটনা, অনেক কিছুই আমি পরে বুঝেছি বা জানছি }
কোরানের শেষ হয়েছে দুই মাস হল। করোনার কারনে বাবার ছয় মাস ধরে চাকরি নেই। বাসা ভাড়া বাকি চার মাসের। বাড়িওয়ালা ভদ্রলোক। ভাড়ার জন্য তেমন প্রেসার দেন নি। কিন্তু , অবশেষে বাড়িওয়ালা বাবাকে জানিয়ে দিলেন তিনি নতুন টু-লেট দিবেন । বাবা নতুন বাসা দেখা শুরু করলো। আমাদের ছোট পরিবার ।আমি ,আম্মু আর বাবা। আমাদের ছোট বাসা হলেই চলে। যদিও এই বাসাটা অনেক বড় ছিল। ছোট বাসা তো পাওয়া যায় আর যে বাসা গুলো পাওয়া যাচ্ছিল তা নেওয়ার আর্থিক অবস্থা বাবার নেই। এদিকে আমাদের বাসা ভাড়া হয়ে গেল । বাবা আর কোন উপায় না পেয়ে সাবলেট উঠার কথা আম্মুকে বলল। আম্মু অনেক পর্দাশীল। বাইরে গেলে সবসময় বোরখা হিজাব পরে। আম্মু কিছুতেই সাবলেট থাকতে রাজি হল না। বাবা অনেক বুঝিয়ে আম্মুকে রাজি করালো। কথা দিল চাকরি পেলেই নতুন বাসায় উঠার। আম্মু আর উপায় না দেখে রাজি হল। কিন্তু, সাবলেটও পাওয়া যাচ্ছিল না। বাড়িওয়ালা জানালেন সামনের মাসের এক তারিখে নতুন ভাড়াটিয়া উঠবে। বাবা একটা নতুন বাসা দেখে নিজেই সাবলেটের জন্য ফেসবুকে পোস্ট দিল। অবশেষে সাবলেট পাওয়া গেল। আমরা এপ্রিলের ত্রিশ তারিখ বাসা চেঞ্জ করলাম। বাবা আমাদের অনেক মালপত্র আসবাবপত্র বিক্রি করে দিয়ে নতুন বাসায় উঠলাম। কারণ এগুলো নতুন বাসায় জায়গা হবে না আর টাকারও দরকার ছিল। ওই একই দিনে সাবলেট পরিবারও আসলো নতুন বাসায় উঠার জন্য। বাসার সামনে দুই পরিবারের দেখা হল। বাবা আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
বাবা: উনি বিমল দ । ভাসানটেক থানার এসআই।
বাবা আমাকে আন্কেল- আন্টি বলে ডাকতে বলল। আমি উনাকে আন্কেল বলেই ডাকতাম। আন্কেলও উনার পরিবারের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিল।
আন্কেল: সালাম, ইনি আমার মিসেস আর আমার ছোট মেয়ে মিমি। আর বড় ছেলে কলেজে গেছে... চলে আসবে। মিমি আমার চেয়ে এক বছরের ছোট।ওর বয়স পাঁচ বছর। আমার সাথে মিমির কিছুক্ষণের মধ্যেই ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেল। বাবা আর আন্কেল মালপত্র,আসবাবপত্র নামাতে শুরু করলো।
বাবা: বিমল দা, আপনাদের পুলিশের তো সরকারী কোয়াটার দেয়। তাহলে আপনারা কেন ভাড়া বাসায় থাকছেন?
আন্কেল: আর, সরকারী কোয়াটার...। মুরগির খুপরির থেকেও ছোট বাসা। ছিলাম কিছুদিন কষ্ট করে। কিন্তু, ছেলে বড় হচ্ছে, মেয়েও আছে। তাই ভাড়া বাসায় থাকতে হচ্ছে।
আম্মু আর আন্টি আমাদের নিয়ে উপরে ফ্ল্যাটে উঠলো। চার তলায় আমাদের বাসা। ভিতরে ঢুকলাম। সামনে বড় স্পেস আর ডানদিকে পর পর তিনটি রুম। দুটো বেডরুম। বেডরুমের সাথে দুইটা বাথরুম আছে কিন্তু রুমের বাইরে। একটা সামনে দিকে ঢুকতেই আর আরেকটা ভিতরের দিকে । দুই বেডরুমের মাঝখানে একটা ছোট রুম আছে। ভিতরের বেডরুমের পাশেই রান্নাঘর। বাসায় একটাই কমোন বারান্দা , বেশ বড় । দুই বেডরুম দিয়েই যাওয়া যায়। আর মাঝের রুমে জানালা দিয়ে বারান্দা দেখা যায়। আমি আর মিমি বারান্দা দিয়ে এ রুম থেকে ঐ রুমে দৌড়াদৌড়ি করে খেলছিলাম।
আম্মু: বৌদি, আপনি বলেন... আপনারা কোন রুম নিবেন?
আন্টি: আমরা সামনের বেডরুমই নেই। ভিতরের বেডরুমের পাশে রান্নাঘর.. গরম লাগবে।
আমরা ভিতরের বেডরুম নিলাম। আমাদের এক রুম আর আন্টিদের দুটো রুম। ঐ দিন সারা দিন গেল ঘর গোছগাছ করতে। বিকালে মিমির দাদা আসলো কলেজ থেকে। মাঝের রুমে থাকবে সে। আমিও মিমির দেখাদেখি নবীন দা বলতাম। আগে কখনো এভাবে থাকা হয়নি তাই আম্মু একটু অস্বস্তি বোধ করছিল। আস্তে আস্তে মিল হয়ে গেল। এক সাথে চা , নাস্তা, গল্প করে। আম্মু বাসায় সবসময় সালোয়ার কামিজের উপর বড় আবায়া পরে মাথা থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত ঢেকে রাখতো। আর , আন্কেল, নবীনদা বাসায় না থাকলে সালোয়ার কামিজ পড়ে থাকতো নরমাল ভাবেই। কারণ আবায়া পরে কাজ করতে সমস্যা হত , ঘেমে একাকার হয়ে যেত।
সকালে বাবা চাকুরী খুঁজতে বেরিয়ে যেত । আন্কেলও উনার কাজে আর নবীনদা কলেজে। আন্কেল মাঝে মাঝে দুপুরে খেতে আসতো। আর নবীনদা বিকালে বা সন্ধ্যায় আসতো । বাসায় আমি, মিমি,আম্মু আর আন্টি থাকতাম। আমার আর মিমির স্কুল এখনো বন্ধ। তাই আমারা সারাদিন এক সাথে খেলতাম। বিকালে নবীন দা আসলে সে আমাদের সাথে খেলতো , আমাদের পড়াতো। আন্টি আর আম্মু ঘরের কাজ, রান্নাবান্না নিয়ে ব্যস্ত থাকতো।
এক -আধ মাস এভাবেই যাচ্ছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে সমস্যা শুরু হল। আম্মু আর আন্টির মধ্যে রান্না, ঘরের কাজ নিয়ে বাঁধতে লাগল। আন্টি একটু অহংকারি, বদস্বভাব ধরনের। তিনি বুঝাতে চাইতেন এই বাসাটা উনাদের। তাই আম্মুকে আন্টির কথা শুনে কাজ করতে হবে। আম্মু শান্ত স্বভাবের তাই আন্টির কথার উত্তর দিত না। কিন্তু, তবুও আন্টি কথা শুনাতে কোন ছাড় দিতেন না। আম্মু বাবাকে একদিন এসব বলতেই...
বাবা: একটু মানিয়ে নেও । আমি এখনো চাকরি পাচ্ছি না। বিমল দার সাথে কথা হয়েছে। উনি এ মাসের ভাড়া দিয়ে দিবেন বলেছেন। আমি টাকা পেলে উনাকে দিয়ে দিব। ভাবছি... আর চাকরি না করে ব্যবসা করবো। তুমি একটু আপোস করে চলো । আমার একটা ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত।
এরপর থেকে আম্মু আর বাবাকে কিছু বলত না। একদিন সকালের দিকে বাবা বাসায় আছে। আম্মু রান্না ঘরে রান্না করছিল। আমাদের রুম থেকে বের হলেই আন্টিদের বাথরুম সামনাসামনি। বাবা রুম থেকে বের হচ্ছিল। তখনই আন্টি গোসল করে ভেজা কাপড় পরে বের হয়ে আসলো । বাবা আর আন্টি চোখাচোখি হলো। বাবা ঘুরে রুমে চলে আসলো । আন্টিও রুমে চলে গেল। আন্টি সবসময় এমন করে ভিজা কাপড়ে বের হয় , এভাবেই বারান্দায় যেয়ে কাপড় মেলে দেয়। আম্মু রান্নাঘর থেকে দেখলো আন্টির বাবার সামনে এভাবে আসা। পরে , আন্টির রুমে গেল।
আম্মু: বৌদি, আসতে পারি ?
আন্টি: হ্যাঁ.. বলেন।
আম্মু: বৌদি, আপনি এভাবে গোসল করে ভেজা কাপড়ে বের হন । বাবুর বাবা তো বাসায় থাকতে পরে ... এটা কি ঠিক?
আন্টি: তো আমি কি করবো? ... আপনার স্বামীর নজর খারাপ, উনার চরিত্র খারাপ এটা আমার দোষ। ... নিজের স্বামীকে সামলাতে পারে না। আর আমাকে ঠিক বেঠিক বুঝতে আসছে ।
আম্মু: বৌদি,আপনি এসব কি বলছেন..!!
আন্টি: ঠিকই বলছি। আমার বাসায় আমি যেভাবে খুশি থাকবো । আমি কি আপনার মত আলখেল্লা পরে ঘুরব নাকি...!!
নবীন দা কলেজে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছিল। আন্টির চিল্লাচিল্লি শুনে রুমে গেল। আন্টিকে শান্ত করার চেষ্টা করলো । নবীন দা, আন্কেল সবসময় আম্মুকে সাপোর্ট করে। এজন্য আন্টি নবীনদাকে অনেক বকাবকি করে, নবীনদাকে আম্মু ছেলের মতই দেখে । ভালো কিছু রান্না করলে, আন্টি ব্যস্ত থাকলে আম্মু নবীনদাকে খাবার দেয় । আন্টি এগুলো পছন্দ করে না। তবু নবীনদা চুপি চুপি আম্মুর কাছে থেকে নিয়ে খায় । নবীনদা আম্মুকে খালা বলে ডাকে।
নবীনদা : মা , তুমি খালার সাথে কেন এভাবে কথা বলো সবসময়। খালা আপনি যান তো । মায়ের কথা শুনেন না ।
আন্টি চিল্লাতে থাকলো । আম্মু চলে আসলো। নবীনদা কিছুক্ষণ পর চলে গেল। এর কিছুদিন পরে , আমি আর মিমি আমাদের ঘরে বসে খেলছিলাম। আন্টি মিমিকে গোসল করতে ডাক দিল। মিমি আবার এসে খেলবে, তাই ওর খেলনা রেখে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর আন্টি এসে আমাকে বকতে লাগল।
আন্টি: তোর বাবা মা তোকে এইসব শিক্ষায়..? আমার মেয়ের দামী দামী খেলনা গুলো চুরি করে রেখে দিছিস।
আমি: না তো, আন্টি আমি নেই নি।
আন্টি: চুপ, মুখে মুখে মিথ্যা কথা বলে।
আম্মু রান্না ঘরে ছিল। আন্টির চিল্লাচিল্লি শুনে তাড়াতাড়ি আসলো ।
আম্মু: কি হয়েছে বৌদি?
আন্টি: এই যে আপনার ছেলে আমার মেয়ের দামী খেলনা চুরি করে রেখে দেয়।
আম্মু: বৌদি..! এসব কি বলছেন? ওরা ছোট মানুষ। ওরা এক সাথে খেলে । আপনি এগুলো কি বলছেন?
মিমিও আন্টির পিছন থেকে এসে বলল,
মিমি: না মা , আমি রেখে গেছি আবার এসে খেলবো তাই । আন্টি: চুপ... একদম ওকে বাঁচাতে মিথ্যা বলবি না।
আম্মু: বৌদি, আপনি আমার ছেলেকে এভাবে বলতে পারেন না।
আন্টি: নিজের ছেলে চুরি করে...ওকে বাঁচাতে আমার উপর কথা ঘুরাচ্ছেন । আমার মেয়ের কতগুলো দামী দামী খেলনা ছিল। এই বাসায় আসার পর থেকে একটাও পাই না। এখন এই নতুন খেলনাটা চুরি করার ধান্দায় আছে।
আম্মু আমাকে মারতে লাগল । আমার কাছ থেকে খেলনা নিয়ে গেল। আমি কাঁদতে লাগলাম।
আম্মু: আর কোনদিন যদি দেখছি, তুমি মিমির কোন খেলনায় হাত দিছো ...ওর কাছেও যাবা না তুমি। ...এই নেন বৌদি আপনার খেলনা। আর মিমি মা তুমি আর কোনদিন তোমার কোন খেলনা বাবুকে দিবা না।
আন্টি মিমিকে টানতে টানতে নিয়ে গেল। মিমিও কাঁদতে শুরু করলো। রাতে বাবাকে আম্মু সব বলল।
বাবা: দেখো , আমাকে এসব আজাইরা কথা বলতে আইসো না তো। উনি বড় , তোমার ছেলেকে একটু বকছে তো কি হয়েছে...!! তুমি আসছো আবার আমাকে বলতে। এমনিতেই আমি অনেক প্রেসারে থাকি।
আম্মু: তোমার কাছে তো আমাদের সব কথাই আজাইরা মনে হয়।
বাবা শুয়ে পরলো। আম্মুও আমাকে নিয়ে বাবার পাশে শুয়ে পড়লো। মাঝরাতে আমার ঘুম একটু ভেঙে গেল। আম্মু বাবাকে ডাকছে।
আম্মু: এই শুনছো ..এই ঘুরো না এদিকে। বাবু ঘুমাচ্ছে।
আম্মু একটা পা বাবার উপর তুলে দিল। বাবাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিল ।
আম্মু: এদিকে ঘুরো না জান ।
বাবা: ওফ ... সাবিনা..এমন করো না তো। সকালে উঠে বের হতে হবে। ঘুমাতে দেও।
আম্মু আরো জাপটে ধরলো বাবাকে ।
আম্মু: ঘুমাবা তো ... আগে একবার ঘুরো তো । আমার জান....লক্ষীটি ... এদিকে আমাকে দেখ একবার।
বাবা জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল আম্মুকে।
বাবা: কখন থেকে বলছি... কথা কানে ঢুকছে না ..!! শরীরের কি বেশি জ্বালা...
আম্মু আমার উপর এসে পড়লো। আমি ব্যাথা পেয়ে কাঁদতে লাগলাম। আমাকে দেখে বাবা চুপ করে শুয়ে পরলো। আম্মু আমাকে আদর করে আবার ঘুম পাড়িয়ে দিল । আমি বুঝেছিলাম আম্মুর চোখে পানি। সকালে আমি ঘুম থেকে ওঠার আগেই বাবা চলে গেছে। আমাকে আম্মু রুম থেকে বের হতে নিষেধ করেছে । দুপুরে আম্মু রান্না শেষ করে রুমে আসলো । দরজা লাগিয়ে দিল। আবায়া খুলে বিছানায় ছুড়ে ফেলল। গরমে ঘেমে গেছে। বিছানায় বসলো আমার পাশে। এমন সময় বেল বাজল, আন্কেল আসলেন মনে হয়। কিছুক্ষণ পর আমাদের রুমের দরজা নক করল।
আন্কেল: ভাবী, আসতে পারি ?
আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া পরে নিয়ে দরজা খুলে দিল।
আম্মু: জী , দাদা.. কিছু বলবেন?
আন্কেল: না .. আমি একটু বাবুর সাথে দেখা করতে আসলাম।
আম্মু: আসেন...
আন্কেল ভিতরে এসে বিছানায় বসে আমাকে একটা বক্স দিলেন। আমি আম্মুর দিকে তাকিয়ে বক্স নিয়ে খুল্লাম। রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি ।
আন্কেল : এটা তোমার জন্য।
আম্মু: না ...না ... বিমল দা ...
আম্মু আমার কাছ থেকে নিয়ে নিতে গেল । আন্কেল বাধা দিলেন ।
আন্কেল: ভাবী, না ... প্লিজ..এটা বাবুর জন্য।
আন্কেল আম্মুর হাত ধরলেন। আম্মু একটু চমকে সাথে সাথে হাত সরিয়ে নিল।
আন্কেল: ভাবী, গতকাল মিমির মা ,..যা করছে তার জন্য আমি খুবই লজ্জিত। আমি ওর হয়ে ক্ষমা চাইছি।
আম্মু: না .. না.. ছি..ছি , বিমল দা, ... আপনি এভাবে বলবেন না।
আন্কেল: না ... ভাবী, মিমির মা খুবই খারাপ কাজ করেছে। আর, আমি ওকে বলে দিছি । ও এরকম আর কোন দিন করবে না । আমাকে মিমি সব বলছে । আমার মেয়েটাও কালকে রাতে অনেক কান্নাকাটি করছে। খাই নাই রাতে । তাই, ওর মা যা করছে...ঐ রাগ আপনি বাচ্চাদের উপর দেখায়েন না।
আম্মু: না ..না ... দাদা। আমার মিমির উপর কোন রাগ নেই। ও তো আমার মেয়ের মত । কিন্তু, বৌদি যেভাবে...
আন্কেল: আমি বুঝতে পারছি। আমি ওর হয়ে ক্ষমা চাইছি।
আম্মু: ছিঃ.. ছিঃ... বিমল দা। এভাবে বলবেন না।
আন্কেল: আপনি আর ওদের একসাথে খেলতে নিষেধ করেন না ।
আম্মু: আচ্ছা । আপনি তো দাদা লাঞ্চ করন নি । বসেন ... আমি খাবার নিয়ে আসি ।
আন্কেল: না ...না ...লাগবে না । মিমির মা ঘুমাচ্ছে। ওকে ডাক দেই ...
আম্মু: বৌদিকে আবার কষ্ট দিবেন কেন? আপনি বসেন আমি আনছি।
আম্মু চলে গেল রান্না ঘরে। আমি মিমির সাথে খেলার জন্য যাচ্ছিলাম। আন্কেল বলল, ও ঘুমাচ্ছে। আম্মু খাবার নিয়ে এল ।
আন্কেল: ভাবী, শুধু শুধু কষ্ট করলেন।
আন্কেল আমাদের বাথরুম থেকে হাত মুখ ধুয়ে নিল।
আন্কেল: আপনারা খাবেন না।
আম্মু: বাবু খেয়েছে। আমি পরে গোসল করে খাব ।
আম্মু আন্কেলের খাবার বেড়ে দিয়ে আন্কেলের সামনে বসলো।
আন্কেল: আপনার খাবার অনেক মজা হয় । মিমির মা আবার জানেন তো এসব পছন্দ করে না।
আম্মু: এভাবে বইলেন না । বৌদি আপনার অনেক ভালোবাসে , যত্ন করে।
আন্কেল: বাবু, তুমি বারান্দায় যেয়ে খেল ।
আমি বারান্দায় চলে গেলাম। কিন্তু, আন্কেল, আম্মুর কথা শুনতে পাচ্ছিলাম।
আন্কেল: কি আর বলবো ভাবী... মিমির মা স্বভাবই খুব স্বার্থপর।
আম্মু: যেমনই হোক... আপনার ছেলে মেয়ের মা ।
আন্কেল: আমার সাথে বিয়েও করছে চালাকি করে। আমার পুলিশের চাকরি হওয়ার পর , বাবা পুরো গ্রামে লোকজন দাওয়াত করে খাওয়ায়। আমার বাবার আবার খুব প্রতিপত্তি গ্রামে। আর, মিমির মা আমার দুঃসম্পর্কের চাচাতো বোন ছিল। আমার পুলিশ হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে জোর করে আমাদের বাসায় পরে থাকতো । মা পছন্দ করতো না , বাবা পছন্দ করতো না। তাও আইসে রান্না করে, মায়ের সাথে সাথে থাকতো । আর এদিকে পুরো গ্রামে ছড়ায় বেরাইলো । আমার সাথে নাকি ওর বিয়ে হবে। পরে , বাবার সম্মানের বিষয় বিয়ে করতে হয়।
আম্মু: হুম... আচ্ছা..যা হওয়ার হয়েছে। ...আর কথায় আছে না যা হয় ভালোর জন্য।
আন্কেল: হুম... সুজন ভাইয়ের কি অবস্থা? চাকরি পাইছে?
আম্মু: না ...বলল, কি ব্যবসা শুরু করবে ।
আন্কেল: ওহ... হ্যাঁ। আমাকেও ব্যবসার লাইসেন্স না কিসের জন্য সাহায্য চাইছিল। আমি বলছিলাম, যতটুকু সম্ভব সাহায্য করবো। পরে তো আর কোন কিছু বলল না...।
আন্কেলের খাওয়া শেষ হলে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে চলে গেলেন। আম্মু সব গুছিয়ে পরিষ্কার করে নিল। বিকালে মিমি উঠার পর আমরা আবার আগের মত খেলা শুরু করলাম। রাতে বাবা আসার পর আমরা খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পরলাম। মাঝরাতে হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘুম ভেঙ্গে গেল আমাদের। আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া পরে নিয়ে বাবার সাথে বের হল। আমিও পিছন পিছন আসলাম। আন্কেল আর নবীনদা আন্টিকে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আন্টি কেমন বেহুঁশ মত হয়ে আছে। বাবা দৌড়ে যেয়ে তাড়াতাড়ি ধরলো ।
বাবা: কি হয়েছে?
আন্কেল: ঘুমের মধ্যে মনে হয় হার্ট অ্যাটাক হইছে।
আম্মু আমাকে আর মিমিকে নিয়ে বাসায় থাকলো । বাবাও উনাদের সাথে হাসপাতালে গেল। আন্টি বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকলেন। আম্মু বাসা থেকে খাবার বানিয়ে নবীন দা কে দিয়ে পাঠাতো। আম্মু আন্কেল, নবীনদা সবার জন্য রান্নাবান্না করতো। তিন-চার সপ্তাহ পর আন্টিকে বাসায় আনা হলো। আন্টির এক সাইড পুরো অবশ হয়ে গেছে। সুস্থ হতে সময় লাগবে। বেডে শুয়ে খাওয়া দাওয়া, হুইলচেয়ারে করে বাথরুমে নিয়ে যেতে হয়। আন্কেল আর নবীনদা শুরুতে কয়েকদিন করলো । কিন্তু, আন্কেল ব্যস্ত থাকে ডিউটি তে। তাই নবীনদা কে করতে হতো । কিন্তু নবীনদা করতে পারতো না। আম্মু সাহায্য করত। আস্তে আস্তে আম্মুই সব কিছু করতে লাগলো। আম্মুই আন্টিকে খাইয়ে দিত, শরীর মুছে দিত , ঔষধ খাওয়ানো সব আম্মুই করতে লাগলো। রাতে মিমি আমাদের সাথে শুতে লাগল। আন্টি অসুস্থ তাই আম্মুই ওর সব দেখাশোনা করত। আমি, মিমি আর আম্মু বেডে ঘুমাতাম। আর , বাবার জন্য আম্মু নিচে বিছানা করে দিত। আন্কেল আম্মু আর বাবাকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানাতে। একদিন সকালে আম্মু কাপড় ধুয়ে বারান্দায় মেলে দিচ্ছিলো। আন্কেল আসলো আম্মুর কাছে। আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া ঠিক করে নিল ।
আম্মু: কিছু বলবেন.. দাদা?
আন্কেল: না...মানে ...
আম্মু: বৌদির কি অবস্থা? ... ডাক্তার কি বলছেন?
আন্কেল: আগের চেয়ে ভালো। কিন্তু, সুস্থ হতে সময় লাগবে।
আম্মু: আপনি মন খারাপ করবেন না। বৌদি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।
আন্কেল: হুম...দেখা যাক কি হয়..!! ইয়ে ....মানে ... ভাবী...
আম্মু: জি ... দাদা... কিছু বলবেন?
আন্কেল: আপনার কোন কাপড় হারানো গেছে...? ...না .. আমি এখন ওর কাপড় ধুয়ে দি । ...তো ভুল করে মনে হয় আপনারটা আমি নিয়ে চলে গেছি ।
আম্মু: ওহ... আমার কোন ড্রেস তো হারায়নি। ...কি জানি...হয় তো খেয়াল করিনি।
আন্কেল: ... দাঁড়ান... নিয়ে আসছি।
আন্কেল একটা মেরুন ব্রা এনে আম্মুকে দিল । আম্মু দেখে লজ্জা পেয়ে গেল। আম্মু কাঁপা কাঁপা হাতে অস্বস্তিতে ব্রাটা নিল ।
আন্কেল: সরি ... ভাবী.. ভুল করে.. মিমির মায়ের ভেবে....
আম্মু: না... ঠিক আছে।
আম্মু মাথা নিচু করে তাড়াতাড়ি চলে আসলো । আন্কেল ডিউটিতে চলে গেল। আম্মু রান্না শেষ করে, আন্টির গা হাত পা মুছিয়ে, আন্টিকে খাইয়ে দিল। তারপর আমাদের দুজনকে খাইয়ে দিল। সন্ধ্যায় নবীনদা এসে আমাদের পড়তে বসালো । আন্কেলও চলে আসলো । আম্মু সবাইকে রাতের খাবার খেতে দিল।
আন্কেল: ভাই আসে নাই?
আম্মু: না ... ওর আসার ঠিক নাই । আপনারা খেয়ে নেন ।
আম্মু আমাকে আর মিমিকে খাইয়ে ঘুম পারাই দিল। বাবা আসতে আসতে মনে হয় অনেক রাত হল। রুমের আলো জ্বল্লে একটু ঘুম ভেঙ্গে গেল। আম্মু বাবাকে খাবার খেতে দিল।
আম্মু: এত রাত কেন ?
বাবা: আর বলো না ... ব্যবসার জন্য এদিক সেদিক অনেক ছুটাছুটি করতে হচ্ছে। কালকে সকালে ঢাকার বাইরে যাচ্ছি।
আম্মু: ওমা..সেকি ... হঠাৎ..! ... কোথায় যাচ্ছ ?
বাবা: এই ..অল্প দিনের জন্য... ঠিক নাই... কয়েকটা জায়গায় ঘুরতে হবে । তবে কাল যাব ময়মনসিংহ।
খাওয়া দাওয়া শেষে আম্মু সব গুছিয়ে এসে আলো নিভিয়ে বাবার পাশে শুয়ে পড়লো।
বাবা: কি হলো ?
আম্মু: কিছু না... তোমার পাশে শুই।
বাবা: না ...যাও উপরে বাচ্চারা আছে .. ওদের সাথে শোও।
আম্মু: বাচ্চারা ঘুমাচ্ছে।
আমি চুমু খাওয়ার আওয়াজ পেলাম। আম্মুর কন্ঠ কেমন পাল্টে গেল।
আম্মু: আমাকে কত দিন তুমি আদর কর না ...জান ...
বাবা: সাবিনা...!!...আমাকে একটু ঘুমতে দেও ...যাও তো যাও...। আমাকে ভোরে উঠে বের হতে হবে।
আম্মু উপরে এসে চুপচাপ শুয়ে পরলো। পরের দিন আমি ঘুম থেকে উঠার আগেই বাবা চলে গেল। মিমি আমাকে ডাক দিল ।
মিমি: উঠো ...উঠো ... খালা বলেছে ... তুমি তাড়াতাড়ি না উঠলে । তোমাকে গরম পানি মেরে দিবে ।
আমি উঠার পর আম্মু আমাদের নাস্তা করিয়ে দিল। তারপর আমি আর মিমি খেলতে থাকলাম। আর , আম্মু আম্মুর কাজে ব্যস্ত থাকলো । রান্নাঘর আর আন্টির রুমে দৌড়ে বেরালো। সন্ধ্যায় নবীনদা আসার পর কিছু সাহায্য করলো । আর , আন্কেল আসার পর আম্মু রুমে এসে রেস্ট নিল । আম্মু কিছুক্ষণ মোবাইলে সময় কাটালে। মিমি আর আমি পাশে বসে খেলছিলাম । কিছুক্ষণ পর উঠে রাতর খাবার দিল সবাইকে। আমাদেরকেও খাইয়ে দিল।
পরের দিন নবীনদা আর আন্কেল দুজনই নাস্তা করে বের হয়ে গেল। আম্মু দুপুরে আন্টির শরীর মুছে দিচ্ছিল। এমন সময় বেল বাজল। আম্মু তাড়াতাড়ি আবায়া পরে নিয়ে, যেয়ে দরজা খুলে দিল। আন্কেল আসলেন। আম্মু আন্টিকে একটা চাদর দিয়ে ঢেকে মেক্সি খুলে ফেলল। নতুন মেক্সি পরিয়ে দিতে লাগল। আন্কেল আম্মুকে সাহায্য করলেন। আন্কেল আন্টিকে তুলে ধরতেই চাদর সরে গেল। আন্কেল আর আম্মু একে অপরের দিকে তাকালো। আম্মু লজ্জায় চুপচাপ কাপড় পড়িয়ে দিল ।
আম্মু: আপনি হাত মুখ ধুয়ে নিন .. দাদা । আমি খাবার আনছি।
আম্মু খাবার নিয়ে গেল। আন্কেল খেতে বসলেন। আম্মু বারান্দা থেকে কাপড় তুলতে গেল ।
আন্কেল: বাচ্চারা খেয়েছে?
আম্মু কাপড় তুলে এনে ভাজ করতে লাগলো।
আম্মু: হ্যাঁ.. ওদের অনেক আগে খাইয়ে দিয়েছি ।
আন্কেল: ভাবী, আপনি না থাকলে কি করে যে ... মিমিকে , নবীনকে ওর মায়ের অভাব বুঝতে দিচ্ছেন না।
আম্মু: এভাবে বলছেন কেন? ওরাও আমার ছেলে মেয়ে।
আন্কেল: ধন্যবাদ ভাবী...।
আম্মু মুচকি হাসলো।
আম্মু: দাদা... বলছিলাম... কাপড় গুলো তে ডিটারজেন্ট পাউডার দেন না ...!
আন্কেল: ... হ্যাঁ... কেন..? কি ... হয়েছে..!!
আম্মু: না... মানে...কাপড় গুলো ভালো মত পরিস্কার হচ্ছে না। ঐ... আপনার কাপড় থেকে...এখনো গন্ধ আসছে।
আন্কেল খাওয়া শেষ করে। হাত ধুয়ে নিলেন।
আন্কেল: ও... আমার কোনটি ... গেঞ্জি?
আম্মু: না ...ইয়ে ... আপনার...ঐ....
আন্কেল : .....জি ... কোনটা ?
আম্মু: ইয়ে....মানে ... আপনার আন্ডারওয়্যার...
আন্কেল: ..ও...সরি ...না ... আসলে সত্যি কথা বলতে কি... ভাবী... আমি ডিটারজেন্ট পাউডার খুব কম দি ...আর বেশিভাগ সময় দেই না ...। ডিটারজেন্ট দিয়ে ভিজিয়ে রাখা , ফেনা বেশি হলে বার বার ধুতে হয় ..। তাই শুধু পানি দিয়েই....।
আম্মু আন্কেলের কথা শুনে হাসতে লাগল।
আম্মু: ... আপনি... দাদা... পারেন ও..। কিন্তু, এভাবে তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন। ... ময়লা কাপড় থেকে রোগজীবাণু ছড়াবে। ... আর বৌদি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে বাথরুমে কাপড় জমা হইছে ... ওগুলো তো ধোয়াই হচ্ছে না।.... মাত্র এক দুইটা করে কাপড় ধোন ..! আর জমা হয়...সাত/আটটা করে। আর আপনার এই ইউনিফর্ম লাস্ট কবে ধুইছেন...কে জানে...।
আন্কেল: হুম...দেখি... একটা কাজের মেয়ে রাখতে হবে...যা বুঝতাছি।... আপনারও সাহায্য হবে । আর ...এই কাজগুলো করে দিবে।
আম্মু: হুম... এটা হলে সবচেয়ে ভালো হয়। ...আর... আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না । ..আমি ধুয়ে দিব আপনাদের কাপড়গুলো।
আন্কেল:... ছিঃ.. ভাবী....না .. আপনি যা করছেন আমাদের জন্য...তার জন্য আমি ঋণী...। ..আর লজ্জা দিবেন না। ... আমি দেখি নবীন কে বলবো .. ধুয়ে দিতে ।
আম্মু: দাদা...কি বলছেন কি ...আমরা একসাথে থাকি ... একটা পরিবারের মত । ... আর নবীন ছোট মানুষ...ও যথেষ্ট করে । ...ও তো নিজের কাপড় নিজেই ধোয় । ..ও কলেজ থেকে এসে বাচ্চা দের সময় দেয়...ওর নিজের পড়াশোনা আছে। আপনাদের দুজনেরই তো কাপড়...ঐ একসাথে ধুয়ে ফেলব ...।
আন্কেল: ভাবী, আমি কি বলে যে আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাবো... আমি জানি না..।
আম্মু: হইছে... আর কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে না।
আন্কেল পকেট থেকে একটা ছোট খাম বের করলেন।
আন্কেল: ভাবী, আমার এই ছোট অনুরোধ আপনাকে রাখতে হবে।
আন্কেল আম্মুকে খামটা দিল।
আম্মু: কি ..এটা ..?
আন্কেল: ... কিছু টাকা আছে।
আম্মু: ... দাদা...কি বলছেন কি..! কখনোই না..।
আন্কেল আম্মুর হাত ধরে হাতের মধ্যে খামটা ধরিয়ে দিলেন। আম্মু কিছুতেই নিবে না , হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলো।
আম্মু: ... আপনি কি করছেন..কি ?.. আমি এটা নিতে পারবো না ।
আন্কেল: ভাবী, প্লিজ... আপনাকে নিতে হবে...রিকুয়েস্ট আমার...। আপনি মাত্র বললেন আমারা এক পরিবার... তাহলে আমার ইনকামে ... মিমির মায়ের যেমন অধিকার...। পরিবারের সদস্য হয়ে আপনার ও তো অধিকার..।
আম্মু আন্কেলের হাত থেকে হাত ছুটানোর অনেক চেষ্টা করেও, না পেরে শেষমেশ টাকা নিয়ে নিল। আন্কেল আবার ডিউটি তে চলে গেল। বিকালে নবীন দা আসলো । আম্মু সবার জন্য নুডুলস বানাচ্ছিল । নবীন দা রান্না ঘরে ঢুকে আম্মুকে সাহায্য করতে চাইলো ।
নবীনদা: খালা, দেও আমি হেল্প করি ।
আম্মু: লাগবে না .. তুমি যাও.. আমি চটপট নাস্তা নিয়ে আসছি।
নবীনদা: আরে খালা ...দেও না আমি পারব। তুমি তো সারাদিন রান্না ঘরে ঢুকে থাকো। ...একটু হেল্প করে দি । তাড়াতাড়ি হবে।
আম্মু: আচ্ছা...এই সবজি গুলো কেটে দেও ।
নুডুলস হওয়ার পর আমরা একসাথে বসে নুডুলস খেলাম। রাতে আন্কেল আসার পর আম্মু খাবার দিতে গেল।
আম্মু: কি হয়েছে দাদা..? ..কি নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করছেন ..?
আন্কেল: কালকে একটা মিশন আছে... নাইট ডিউটি। ...কি করবো...? .. রাতে আপনার বৌদির কাছে থাকতে হয় তো ...।
আম্মু: আরে দাদা.. আমি থাকবো .. একটা রাত তো ..। আপনি মিশন টিশনে সাবধানে থাইকেন।
আম্মু আন্কেল, নবীনদা যাওয়ার পর তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করে কাপড় ধুতে ঢুকলো আন্টিদের বাথরুমে ।
অনেকক্ষন ধরে আম্মু কাপড় ধুতে ছিল। দুপুরে আন্কেল চলে আসলো। আম্মু তাড়াতাড়ি রুমে এসে আবায়া পরে দরজা খুলল। তারপর আবার বাথরুমে ঢুকে গেল। প্রায় ঘন্টা খানেক পরে ঘামে, পানিতে ভিজে কাপড় ধুয়ে বের হলো। কাপড় সব বারান্দায় মেলে দিল ।
আম্মু: দাদা...একটু অপেক্ষা করেন.. আমি খাবার দিচ্ছি।
আন্কেল: আরে ... ভাবী আপনি আগে ফ্রেশ হয়ে নেন...। আমি এখন আর যাচ্ছি না ।
আম্মু: ও... আচ্ছা...। ... দাদা আমি আপনাদের বাথরুমে গোসলে ঢুকলাম... সমস্যা নেই তো । আপনি লাগলে আমাদের বাথরুমে যেতে পারেন।
আন্কেল: আরে ...কি বলেন...কি সমস্যা..! আমি একটু জাস্ট আমার ট্রিমার নিয়ে নেই বাথরুম থেকে...।
আম্মু গোসল করে বের হলো আবায়া পরেই । আমাদেরকে খাইয়ে দিয়ে , আন্কেলের খাবার নিয়ে গেল। আম্মু: এই নিন ... দাদা..খেয়ে নিন।
আন্কেল: আপনি ভাবী..?
আম্মু: আমি বৌদি কে খাইয়ে খেয়ে নিব ।
আন্কেল: আপনি খাইয়ে নিন ... তারপর একসাথে খাব ।
আম্মু: আরে ... দাদা... আমি খেয়ে নিব ... আপনি খান..।
আন্কেল: আপনি খাইয়ে দিন ওকে ... আমিও একটু হাতের কাজটা শেষ করে নি ... তারপর একসাথে খাই।
আম্মু আন্টিকে খাইয়ে দিল।
আম্মু: আসুন দাদা...।
আন্কেলের সামনে বসলো আম্মু। একসাথে গল্প করতে করতে খাওয়া দাওয়া করলো। রাতে আন্কেল চলে গেল।
আম্মু: বাবু আজকে তুমি নবীনদার সাথে ঘুমাও ।... আমি আর মিমি আন্টির সাথে ঘুমাবো ...ওই বেডে তো জায়গা হবে না।
আমি প্রথমে রাজি হচ্ছিলাম না । নবীনদা বললো গেম খেলতে দিবে ফোনে , তাই রাজি হলাম। নবীনদা অনেক রাত পর্যন্ত গেম খেলতে দিল । অনেক রাতে আমাকে বলল,
নবীনদা: বাবু , চলো মিমি কি করছে দেখে আসি ..!
আমি : ও তো ঘুমাচ্ছে..।
নবীনদা: হ্যাঁ... এটাই তো মজা আমরা লুকিয়ে যেয়ে দেখে আসবো ... কিন্তু, কেউ জানবে না ।
আমি : আচ্ছা...চলো ।
নবীনদা: কিন্তু, তোমার আম্মু যদি দেখে ফেলে...বলবা আম্মুর কাছে শুতে আসচ্ছো...।
আমি: আচ্ছা..।
আমি নবীনদার হাত ধরে অন্ধকারে আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে, আন্টিদের রুমের সামনে গেলাম। নবীনদা রুমের দরজার হ্যান্ড লক ঘুরাতেই দরজা খুলে গেল। আস্তে করে দরজা খুলে, আমরা রুমে ঢুকলাম। আম্মু বামে আর আন্টি ডানে মাঝখানে বেডে মিমি ঘুমাচ্ছে। নবীনদা আমাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে বলল। নবীনদা আম্মুর কাছে গেল। প্রথমবার আম্মুকে হিজাব ছাড়া, আবায়া ছাড়া দেখলো নবীনদা । আম্মু বাম কাঁধ হয়ে শুয়ে ছিল। আম্মুর দুধের খাঁজ কামিজের উপর দিয়ে দেখা যাচ্ছে। নবীনদা ফোন বের করে আম্মুর কয়েকটা ছবি তুললো মাথার কাছ থেকে , যাতে দুধের খাঁজ দেখা যায়। কামিজর উপর দিয়ে দুধের বোঁটা গুলো বুঝা যাচ্ছিলো। নবীনদা ছবি তুলে আমাকে নিয়ে বের হয়ে আসলো। রুমের দরজা আবার লাগায় দিল । রুমে এসে নবীনদা আম্মুর দুধের ছবি গুলো দেখতে লাগলো। শুধু আজকের না, নবীনদা আম্মুর আরো ছবি তুলছে। আম্মুর রান্নাঘরে কাজ করার, আম্মুর পাছার এরকম অনেক ছবি। এগুলো দেখতে দেখতে আন্টির ছবিও আসলো । আন্টির পুরো নেংটা ছবি। আন্টির দুধ, গুদের, পাছার ছবি। আমি তখন এগুলো জানতাম না। নবীনদা আমাকে শিখিয়ে দিল ।আর এগুলো দেখতে দেখতে আমার কেমন যেন লাগতে লাগলো। নবীনদা বলে দিল এগুলো কাউকে যেন না বলি , মিমিকেও না। আমিও প্রমিজ করলাম কাউকে বলব না। পরের দিন আমার উঠতে অনেক দেরি হলো। নবীনদাও ঘুম । কলেজে যায়নি।আম্মু জিজ্ঞেস করলো সারারাত কি করছি , আমি কিছু বললাম না। আমি ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবা এসেছে। আম্মু দুপুরে খেতে দিল বাবাকে।
আম্মু: কি অবস্থা...? ... কোথায় আছো ..?
বাবা: আমরা তো ব্যবসার মালপত্র আনতাছি .... কিন্তু... টাকার দরকার... তাই ফিরে আসতে হলো... ভাবছি বিমলদার থেকে কিছু টাকা ধার নিব ...।
আম্মু: তুমি কি বলছো ...কি ...বাসা ভাড়ার জন্য এমনি উনাকে অনেক টাকা দিতে হবে... তার উপর আবার ধার ...।
বাবা: ..তো কি করবো....বলো ..! টাকা তো খুব দরকার..।
আম্মু: আমার কাছে কিছু জমানো টাকা আছে... পাঁচ হাজার এর মত... ।
বাবা: ...ও.... আচ্ছা... তাই দেও ... । তাহলে আর বিমল দা থেকে চাওয়া লাগবে না।
আম্মু: তুমি কি এখনই চলে যাবে..?
বাবা: হ্যাঁ... রাতের মধ্যে ময়মনসিংহ পৌঁছাতে হবে...।
আম্মু টাকা বের করে দিল। বাবা আমাদের আদর করে বিদায় নিয়ে চলে গেল। আন্কেল আসলেন বাবা চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর। আন্কেলকে অনেক ক্লান্ত লাগছিল। আন্কেল সোজা গোসলে ঢুকলেন। আম্মু মিমিকে গোসল করিয়ে দিল। তারপর আমাকে গোসল করতে ডাক দিল।
নবীনদা: খালা , আমি কি আগে একটু বাথরুমে যেতে পারি ..? ...ঐ বাথরুম ফাঁকা নেই ... বাবা আছে।
আম্মু: হ্যাঁ..যাও ... সমস্যা নেই।
আম্মু নবীনদার রুম গোছাতে গেল। বিছানা ঝাড়ার জন্য ফোন সরাতে যেয়ে দেখলো পর্ণ পোজ করা । আম্মু চুপচাপ রেখে দিল । কিছুক্ষণ পর নবীনদা বের হয়ে আসলো। আম্মু আমাকে নিয়ে বাথরুমে ঢুকল। বাথরুমে বেসিনে সাদা সাদা বীর্য আটকে আছে। আম্মু মুচকি হেসে আমাকে গোসল করাতে লাগলো ।
{ এটি একটি সত্য ঘটনা, অনেক কিছুই আমি পরে বুঝেছি বা জানছি }
Last edited: